মৌমিতা পাল:
মওকা বুঝে
এসেণ্সবুড়ি ফুটপাথে ঘুমোক
ভালোবাসা নিপাত যাক
দৃশ্যত কামাতুর রাতে দূরত্বে প্রেম
কাছে এলে অর্গাজম বাজে
বচ্ছরকার বেনো জলে প্রেমিকের নাটুকে প্রেমে
সোনার ল্যাজ গড়ে প্রেমিকের প্রেমিকার মুখ
আয়নাকে অতিক্রম করতে করতে
লম্বা চিঠি লিখেই দেব ,মনোটনি
প্রস্তুত হও প্রিয়তম ,প্লেটোকেও চিনে রাখো পারলে
সম্ভব হলে মেট্রোর মৃত লাশকেও,
সেও তো মানুষ ছিল
পায়রাদের মতো বেশি সঙ্গম কোরো না
শরীরে বা মনে
ভ্যাসেকটমি দরকার ছিল,
সাগরভস্মের পর টের পাওনি
সুমধ্যমা চিনে গেছে অস্বচ্ছ চুম্বন।
কালো ব্রা-এর স্ট্র্যাপে রাত্রি বড় কাঙাল
গুপ্ত প্রেমে বিড়াল তো বোষ্টমী
জলজ বিকেল
শোন হে শান্ত কবি, ভালো-‘বাসা’ গহনাই,
ফুরোবার কোনো কথা ছিল না।
বাঁধানো শানঘাট জুড়ে বৈঠকী সান্ধ্য ঘরে
তুলসীপাতার রস, আমি তোমার জন্যই
স্লোগান তুলেছি— বেশরম!
নির্লিপ্তি কামড়ে ধরে আমাদের গলি, কেন জানো—
তোমার দাম্পত্যের সুখে পুড়েছে আর্তডাহুকডাক।
জুনের কলোনি শহরে সেলাইমেশিনে ইমোশন সেলাই করি, প্রবলতার চিহ্ন রাখিনি বলে
মুছে দেব চিরন্তন।
শান্ত, ডার্ক চকোলেটে আজও
পরিচয়হীন পুরনো যত্ন খেলা করে
আমি কবিতা লিখব বলে।
ঢেউসমাসীন ক্লিটোরিসে লাজুক বাল্মীকি
পুরুষকে ছেড়ে আসি জোয়ারকালীন মোড়ে।
অতীত-অস্তিত্ব সবই অর্জিত,
ভালোবাসা ফুরোয় না, যদিও যথেষ্টর বেশি আহুতি দিয়েছে ভালো-‘বাসা’।
তোমাকে চিনব না চিনেছি বলেই।
জীবন শাসন করুক চারিত্রিক বিকেল,
নররাশি ছেড়ে আমি যাব দূরে-অনন্তর বিপরীতে।
ব্যাকস্পেস
আষাঢ়ের আড়ালে-আবডালে জন্মান্ধ বালকের মতো জেগে রয়েছে ‘আ সিঁয়া আন্দালু’।
চুমু খাওয়ার ইচ্ছে, আলেয়াহ্রদ, স্বীকারোক্তি সবটাই ডিলিট অল হয়ে গেছে।
অয়দিপাউস, প্যাট্রক্লিস, ওডেসিউস— একে একে সবাইকে এগিয়ে দিচ্ছি পানপাত্র। শক্ত জলপাই রঙের প্রেমিকের বুকে মাথা রাখছি। আশেপাশের উপত্যকা থেকে ছুটে আসছে পেরেকতোলা কয়েকটা অনন্তকাল।মোবাইলটা আবার নাড়ছি। সব ধুয়ে মুছে সাফ। জ্বরটা বাড়ছে। আসলে যেদিন জানতে পেরেছি হয়তো চলে যেতে হবে, সেদিন থেকেই জ্বরটা বাড়ছে। কিন্তু আমি তিন কুড়ি বসন্ত পার করতে চাই ছেদহীন সান্নিধ্যে।
ব্ল্যাকডেথের ধাক্কা সামলাতে না পেরে টিউটর শাসনকালে মঠে কমে গেল সন্ন্যাসী, কিন্তু রয়ে গেল প্রাচুর্য। অবনমন ঘটল সন্ন্যাসজীবনের। উচ্ছেদ ক্রমে আসন্ন হলে এসব কারণ খুব সহজেই জড়ো হয়ে যায়।
উচ্ছেদ নয়, ক্রমশ প্রবেশ করছি জ্বরের ঘোরে। ই.এস.আর আরও বাড়ছে। অফুরান গোলাপ নিয়ে চুলের ফিতে বুনছি। গান যদি নাও জাগে রাজা আসবেই।
…………………………………
মৌমিতা পাল পেশায় অনুবাদক। প্রথমে প্রেসিডেন্সি কলেজ পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষক, ফুড কলামনিস্ট। কাব্যগ্রন্থ ‘দাম্পত্যের রাত্রিজল’ (ধানসিঁড়ি)।