দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
হুমায়ুনকে ওয়েসির ফোন!
দল তাঁকে শো-কজ করেছে। তিনি সেই শো-কজের উত্তরও দিয়েছেন। তাতেও দল সন্তুষ্ট হয়নি। মুখোমুখি কথা বলতে চেয়েছে। বিধানসভায় গিয়ে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও বলে এসেছেন হুমায়ুন। শোভনদেবকে স্পষ্ট জানিয়ে এসেছেন, দল যা বলবে সব মাথা পেতে শুনব। তাথপরেই হুমায়ুন যোগ করেছেন, “আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে বা আমার জাতিকে আক্রমণ করলে আমি চুপ থাকব না।” প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, দলের ওপরে জাতি। দলের ওপরে ধর্ম।
তাঁর এই বক্তব্যের কারনে কিনা জানা নেই, তবে এর পরেই আসাউদ্দিন ওয়েসির দল ‘মিম’ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর। ওয়েসির তরফে একাধিকবার ফোন এসেছে হুমায়ুনের ফোনে। বক্তব্য একটাই, আমাদের দলে যোগ দিন। আপনার নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ মিম চলবে।
বলা বাহুল্য লক্ষ্য একটাই। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোট। মিমের এ হেন কার্যকলাপে অনেকে আবার বিজেপির হাত দেখছে। রাজনৈতিক মহলের কেউ কেউ বলছেন, একুশের নির্বাচনে, মমতার মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে বিজেপি আইএসএফ কে কাজে লাগাবার চেষ্টা করেছিল।
এই দাবি যদি সঠিকও হয় তাহলে বিছেপি যে এই কৌশলে সফল হয়নি তা আজ স্পষ্ট। এবার, ছাব্বিশের ভোটের আগে বিজেপি ওই একই খেলা খেলতে চাইছে মিম কে ধরে! আর মিম বেছে নিতে চাইছে হুমায়ুনকে। শুভেন্দুর নিরন্তর মুসলিম বিরোধী কথাবার্তার বিরুদ্ধে যে হুমায়ুন এখন প্রতিষ্পর্ধী। শুভেন্দুর ‘চ্যাংদোলা’ উক্তির পাল্টা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘ঠুসো খেতে হবে।’
সূত্রের খবর, হুমায়ুন ওয়েসির এই প্রস্তাব খারিজ করেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে কোনও কোনও ইস্যুতে তাঁর মতবিরোধ হলেও ‘খাল কেটে কুমীর’ আনতে তিনি রাজি নন বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য। এ রাজ্যের মুসলিমদের কাছে মিম কখনোই মমতার বিকল্প নয়। এ কথা সম্যক জানেন এই পোড়খাওয়া রাজনীতিক। তাছাড়া মিমকে বাংলার পথ দেখিয়ে বিজেপিকে সুবিধে করে দিতেও রাজি নন তিনি।
তাই দলের সঙ্গে যতোই খিটিমিটি লাগুক হুমায়ুন আপাতত তৃণমূল ছাড়ার কথা ভাবছেন না। বরং ঈদের দিনগুলো পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিলেত থেকে ফিরলে তাঁর সঙ্গে একবার কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছেন হুমায়ুন কবীর।