চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো :
কল্যাণ-আচ্ছেলাল তরজার জল এবার গড়াল কালীঘাট পর্যন্ত।
আগামীকাল, বুধবার আচ্ছেলাল কে ডেকে পাঠিয়েছে দলের উচ্চ নেতৃত্ব। তাঁর সঙ্গে কথা বলে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী জানতে চাইবেন ভরা সভায় কেন তিনি এমন ব্যবহার করেছেন।
শোনা যাচ্ছে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন দলের সিনিয়র নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আচ্ছেলাল কে ‘ওয়ারনিং’ দিতে পারে দল। তাতে কাজ না হলে তাঁকে শো-কজ করা হতেও পারে।
আচ্ছেলাল অবশ্য মনে করছেন, তিনি প্রতিবাদ করেছেন মাত্র এবং প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের আছে।
তাঁর কথায় তিনি দল বিরোধী কিছু করেন নি। দলের একজন নেতার অশিষ্ট ব্যবহারের প্রতিবাদ করেছেন।
অভিজ্ঞ রাজনীতিক আচ্ছালাল, দলের অন্দরে কর্মীদের সম্মান অসম্মানের বিষয়টি সুচারু ভাবে সামনে নিয়ে এসেছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দলের কোম্পানি হয়ে ওঠার বিষয়টি বারবার করে সামনে এনেছেন দলত্যাগী মুকুন-শুভেন্দুরা। তাঁরা অবশ্য আঙ্গুল তুলেছেন দলের একেবারে শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে।
আচ্ছেলালের প্রতিবাদ জন্ম দিচ্ছে আর একটা নতুন প্রশ্নের। সেটি হল, তাহলে কি নেতা নয় ‘বস’ বা দল নয় ‘কোম্পানি’ কিংবা ‘কর্মী’ নয় অধস্তন কর্মচারী। এমন মনোভাব জন্ম নিচ্ছে দলের দ্বিতীয় সারির নেতৃত্বেও। যে মনোভাব থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নেতারা ‘ধমকাতে চমকাতে’ পারেন আচ্ছেলালের মত দলের দুর্দিনের কর্মীদের?
আচ্ছেলাল বলেছেন, কিছু বলার থাকলে কল্যাণ বাবু আমাকে আলাদা করে বলতে পারতেন। কিন্তু ভরা সভায় তিনি আমার সঙ্গে যে ব্যবহার করেছেন তা আমার আত্মসম্মানে আঘাত করেছে।
আচ্ছেলালের আরও সংযোজন, ‘সহ্যের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছিল,’ তাই তিনি প্রতিবাদ করেছেন।
সব মিলিয়ে কাল, বৃহস্পতিবার, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আচ্ছেলালের বৈঠকের আগে হুগলি জেলার তৃণমূল রাজনীতির জল আরও ঘোলা হয়েছে।
জেলায় দলের কর্মী এবং মাঝারি ও ছোট নেতাদের একটা বড় অংশে আচ্ছেলালের প্রভাব আছে। তার ওপর তাঁর ভাই দিলীপ যাদব হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি। বুধবার চ্যানেল হিন্দুস্তানের একটি ফেসবুক লাইভে তাঁর ভাই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নে আচ্ছেলাল তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘সিলিং ফ্যান এক জায়গায় থাকে আর রেগুলেটর আর এক জায়গায়।’
হুগলি জেলা তৃণমূলের যাঁরা খবর রাখেন তাঁরা জানেন দিলীপ যাদব বড় নেতা হলেও তাঁর রাজনৈতিক রাশ আচ্ছেলালের হাতেই। তাঁকে নেতা করার পিছনে আচ্ছেলালের রাজনৈতিক মস্তিষ্কের বড় ভূমিকা ছিল।
এখন আচ্ছেলাল যাদব কে কী ভাবে বা কোন পথে মোকাবিলা করেন সুব্রত বক্সী ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সে দিকেই এখন নজর রাখছে হুগলির রাজনৈতিক মহল।