দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
কোয়েস্ট মলে ধুতির প্রবেশ নিষেধ। শণিবার জনৈক ভদ্রলোক ধুতি পরে পার্ক সার্কাসের কোয়েস্ট মলে যান। অভিজাত এই বিপণিতে তাঁকে ঢুকতে বাধা দেয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বাঙালি ধুতি পরে দোকান বাজারও করতে পারবে না! সোশ্যাল মিডিয়ায় মোটামুটি এই মর্মে রাগ, দুঃখ, অভিমান ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত।
এবার সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যের দুই প্রবীন রাজনীতিক সোমেন মিত্র ও সৌগত রায়।
সোমেন বলেন , আমি ভাবতে পারছি না এটাও বাংলায় সম্ভব! ধুতি জাতীয় পোষাক। মলের মালিকরা কী এখনও ব্রিটিশের পা ধোয়া জল খাবেন? সকলে মিলে এর তীব্র প্রতিবাদ করা উচিত।
সোমেন-সৌগত দুজনেই এখনও রাজনীতির আঙিনায় ধুতিকে প্রাসঙ্গিক রেখেছেন। বিদেশে বেড়াতে গিয়ে কখনও -সখনও অন্য পোষাক পরলেও, দেশের মাটিতে এঁরা সারা বছরই ধুতিতেই সচ্ছন্দ।
সৌগত রায় বিষয়টি শুনেই বলেন, “আই আ্যম শকড!” তিনি মনে করিয়ে দেন কোয়েস্ট মলের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কার বাবার কথা। বলেন, রমাপ্রসাদ গোয়েঙ্কা বেশিরভাগ সময় ধুতি পরতেন। আরও দুটি কড়া শব্দ কোয়েস্ট মলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেন সৌগত। বলেন, “এটি দেশবিরোধী কাজ এবং গোয়েঙ্কাদের বিরুদ্ধে এই মর্মে আদালতে মামলা করা উচিত।”
আর একজন ধুতি-পাঞ্জাবির কদর করা প্রবীন নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই মত পুরো ভিন্ন। তিনি বলেন, “মোটেই ধুতির জন্যে আটকায়নি। আমিও ওখানে ধুতি পরে যাই।এমনও নয় যে ওখানে সবাই আমায় চেনে।” তবে আটকাল কেন? সুব্রতর মতে জনৈক ধুতি পরিহিতকে আচকানো হয়েছে তাঁর ধুতি পরার ধরণে। তাঁর কথায়, “হাঁটুর ওপর ধুতি, ঝাকড়া চুল… আমি তো আমার বাড়িতেই ঢুকতে দিতাম না!”
সুব্রত যাই বলুন আম বাঙালি বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি, তা সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই বোঝা যাচ্ছে।
বাঙালি হয়ত বছরে দু’একবার ধুতি পরে। পোষাকটি হয়তো নেহাতই আনুষ্ঠানিক। তবু ধুতি এখনও বাঙালিয়ানার স্বাক্ষর। বাঙালির প্রচ্ছন্ন অহংবোধে সম্ভবত না বুঝেই আঘাত করে ফেলেছে গোয়েঙ্কাদের কোয়েস্ট মল।
ছবি ও ভিডিও সৌজন্য ঃ দেবলিনা সেন
আরও পড়ুন :-
Exclusive – সঙ্ঘ-বিজেপি-রাজ্যপালকে বাদুড়িয়াকাণ্ডে দায়ি করে খবর, অভিযোগ নিল না মমতার পুলিশ