সুমন ভট্টাচার্য :
মান্ডার রাজা বিশ্বনাথ সিংহ একসময় কংগ্রেসকে গভীর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন। এবার কুর্মী নেতা নীতিশ কুমার কী তার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করালেন সনিয়া গান্ধিকে! সম্ভবত এর উত্তর হ্যাঁ। নীতিশের পদত্যাগকাে অনেকে বিহারের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করে দেখছেন। এভাবে যাঁরা দেখছেন, তাঁরা ঠিক দেখছেন কী! বিহার রাজনীতির এই সন্ধিক্ষণে তাঁরা আরও যা দেখতে পারতেন তা এখানে খোলসা করা দরকার।
নীতিশের পদত্যাগ উপাখ্যানে আপাত ভাবে লালু ও তেজস্বী মঞ্চ জুড়ে থাকলেও, মঞ্চের পিছনে রয়েছেন মোদি। নীতিশ ও মোদি হাতে হাত মিলিয়ে দু’হাজার উনিশের নির্বাচনের এজেন্ডা ঠিক করে দিলেন এবং সেই এজেন্ডা আর কিছু নয় দুর্নীতি। আগামী যে আটটি বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে, সেখানেও কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলগুলির বিরুদ্ধে মোদি ও অমিত শাহ-র তুরুপের তাস হবে দুর্নীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই জিহাদে মোদি এবার নিজেকে ছাড়াও আর একজন ব্র্যান্ড আ্যম্বাসাডার পেয়ে গেলেন।
নীতিশ কুমার,যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের কুর্সি পর্যন্ত বাজি রেখেছেন। গরু, সাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যুকে পিছনে ফেলে আজ থেকে সামনে চলে এল, প্রসঙ্গ দুর্নীতি।
মোদির তৈরি করা চিত্রনাট্যে নীতিশের সংলাপ। ডায়লগ ডেলিভারি এত জোরাল যে এখন কংগ্রেস আ্যন্ড কোম্পানিকে নেহাত ফিকে লাগছে। মোদি ও নীতিশ মিলে যে হ্যারি পর্টার সিরিজ লিখবেন, তাতে কারা নায়ক এবং কারা খলনায়ক হবেন, সেটা আন্দাজ করা যায়। তবে মুশকিল হচ্ছে জোট রাজনীতির মার্ক জুকেনবার্গ হিসেবে যদি সনিয়া গান্ধিকে শিরোপা দেওয়া যায়ও, আপাতত দশজনপথবাসিনীর কিছু করার নেই। কংগ্রেস মানেই দুর্নীতি আর মদতদাতা, এবং এনডিএ শুদ্ধ গঙ্গা জলের মত পবিত্র, এইরকম একটা ধারণা মোদি, নীতিশ ও অমিত শাহ মিলে ভারতবাসীর মাথায় গেঁথে দেবেন। এই কাজে সবচেয়ে বড় সহায় হবে, নীতিশের ভাবমূর্তি। দক্ষ ও সে প্রশাসক হিসেবে নীতিশের ভাবমূর্তি। দুর্নীতির এই তিরে নীতিশ ও মোদি শুধুমাত্র লালুপ্রসাদ আর কংগ্রেসকে বিঁধবেন তা কিন্তু নয়। একই সঙ্গে আরও কত আঞ্চলিক দল ও তাঁদের নেতা-নেত্রীদের হৃৎকম্প ঘটিয়ে দিলেন, সেটাও সহজেই অনুমান করা যায়।
আরও পড়ুন :-