Breaking News
Home / TRENDING / ২৩ অক্টোবর, সুনীলদার শবযাত্রা, মৃত্যুর দিক

২৩ অক্টোবর, সুনীলদার শবযাত্রা, মৃত্যুর দিক

 অভিজিৎ বেরা

একটা মৃত্যু তোমাকে কী কী এনে দিতে পারে?
কী আবার! একটা আদিগন্ত শূন্য মাঠ। একলা হয়ে যাওয়া একটা রোববারের সকাল। একটা যাত্রীবিহীন ট্রাম। তার ঘন্টা বেজে চলেছে তো চলেইছে। তবু কেউ উঠছে না। একটা শহর যেখানে মড়ক না কী যেন লেগেছে। কোনও জনমানবের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। আর আমি চলেছি তো চলেছি। দোকানপাট খোলা। রেস্তোরাঁ। টেবিলে খাবার। সিজলারের ধোঁয়া উঠছে। যেন কেউ এক্ষুনি অর্ডার করে একটু বাইরে গেছেন। তাঁর সঙ্গী তাঁকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমিও তো কাউকে খুঁজে পাচ্ছি না। একটা মানুষকেও না। কিছুই না শুধু একটু কথা বলতাম। কতদিন কিছু বলিনি। নিজের ভাষা বলিনি। শহরের বড় বড় থামগুলো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ট্রাফিক সিগন্যালগুলো তাকিয়ে আছে। ওরা যে যার নিজের মত লাল হচ্ছে। নীল হচ্ছে। হলুদ। গিয়ে একটা জেব্রা ক্রশিংয়ে শুয়ে পড়ি। কেউ এসে চাপা দিয়ে যাক আমায়। কেউ। শুয়ে শুয়ে আমার ঘুম পেয়ে যায়। সে এক গভীর ঘুম! ঘুম ভেঙে দেখি চারিদিকে ধোঁয়া। লাল নীল। হলুদ। সব অস্পষ্ট। আমি হাতড়ে হাতড়ে পথ খুঁজি। ঘন কুয়াশার মত ধোঁয়া। আমি দু’দিনের লেখক। কেউ আমায় পথ বলে দাও। একটা দেওয়াল এসে আমায় কনুই মেরে গেল। একটা রেলিং এসে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিল। আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
দু’বার ম্যানহোলে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলাম। কারা যেন শহরের সব ম্যানহোল খুলে রেখে গেছে। আর তার ভেতর থেকে গলগল করে পোকা বেরোচ্ছে। সব কালো কালো পোকা। তারা দ্রুত শহর ছেয়ে ফেলছে। আমার স্নিকারে ঢুকে পড়ছে। পা বেয়ে প্যাণ্টালুনে ঢুকে পড়ছে । জামা বেয়ে গায়ে। মাথায়। চোখে। নাকে মুখে শরীরে। একটা দেওয়াল ধরে বসে পড়ি। কাছেই, খুব কাছেই একটা বড় ঘড়ি  ঢং ঢং  করে শব্দ করে ওঠে। তার কাঁটা ঘুরতে ঘুরতে মাটিতে নেমে আসে। আমি তাই ধরে ঝুলতে থাকি। প্রাণপণে। সে ঘুরতে ঘুরতে আমাকে ওপরে তুলে নেয়। পোকাগুলি গা থেকে ঝরে ঝরে পড়ে। নীচে। ঝরে ঝরে নিচে পোকার স্তুপ হয়ে যায়। তাদের বংশ বাড়ে। আমি ঘড়ির মাথায় উঠে দেখি দূরে বহুদূরে একটা জটলা। একটা শবযাত্রা। সুনীলদার। কিন্তু সেটা কোন দিক আমি ঠাহর করতে পারি না। আমার সময় কাল দিক সব ভূল হয়ে যায়। আমি নেমে এলোপাথাড়ি দৌড়তে থাকি।
আমি দুলাইনের লেখক। কেউ আমাকে প্লিজ দিক বলে দাও।
Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *