Breaking News
Home / TRENDING / রাতের কল্লোল বুঝেছিল শক্তি স্বেচ্ছাচারী

রাতের কল্লোল বুঝেছিল শক্তি স্বেচ্ছাচারী

সুমন সেনগুপ্ত:

 

তখন আমার বয়স কুড়ির আশেপাশে। একটি কবি সম্মলনে শক্তিকে নিয়ে যাওয়ার ভার পড়ল। বন্ধুরা পইপই করে বলে দিয়েছে এক মুহূর্তের জন্য কবিকে হাতছাড়া না করার। কবি নাকি বিভিন্ন আছিলায় জাল কেটে বেরিয়ে যেতে চাইবে। গোলপার্ক থেকে, এল ৯ বাসে উঠেছি। যাব ডানলপ। অনেকটা পথ। এল ৯-এর একটু বর্ণনা দিই। বাসটি আড়াই তল। বাসটির ড্রাইভার-কেবিন মড়ার মতো শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন। ওপরে সামনের সিটে আমি আর কবি। কিছুক্ষণের মধ্যে বুঝতে পারলাম কবি নেশায় আচ্ছন্ন। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, এটা পক্ষিরাজ ঘোড়া না ময়ূরপঙ্খী নৌকা। আমি নির্বাক। তিনি হঠাৎ উঠে দাঁড়ালেন। মাথায় আঘাত পেলেন। আর আমি নিজেকে প্রশ্ন করে চলেছি ওনাকে বশ করব কী করে। ওনার কবিতা মাথায় এল– একটু নেমে দাঁড়াও,যদি আমার কাছে দাঁড়াতে হয়/একটু উঠে এসো,যদি আমার কাছে দাঁড়াতে হয়। শক্তির জীবন জুড়েই অস্থিরতা। এই অস্থিরতা থেকে রেহাই পায়নি তার কাব্য।
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় জঙ্গলের দিনরাত্রি উপন্যাসে চরিত্র প্রতিকৃতিতে শক্তি চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে লিখেছেন –এদেশে নবীন নামে এক জেলে ছিল। এদেশে মহুয়া খুবই পাওয়া যেত। এদেশে শুনেছে লোকে ওর কোলাহল…। ওর মত ভিক্ষাবৃত্তি কেহই করেনি শক্তি আর মহুয়া সমার্থক। আমরা যখন ছাত্র অবস্থায় তখন শক্তি সম্পর্কে একটা মিথ প্রচলিত ছিল। শক্তির পাশে সুন্দরী মেয়ে সচ্ছন্দে শুয়ে থাকতে পারে। মদ ও সুন্দরী মহিলা বেছে নিতে বললে শক্তি মদই বেছে নেয়। শক্তির তীব্র উপস্থিতি কবিতার পরেই তার জীবন চর্চায়। শক্তি নিয়ে অসংখ্য গল্প ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। শক্তি বাজার করতে বেরিয়েছেন কিন্তু বাজার না করে কোন ঠেকে গিয়ে বসে পড়লেন। যখন খেয়াল হল তখন সন্ধে গড়িয়ে গেছে। এক কবি সম্মেলনে গেছেন কবি। সংগঠকরা তার হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন মদ। যখন তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল তখন তিনি টলমল। এই অবস্থায় অবনী বাড়ি আছ শুরু করলেন। শ্রোতারা বাকশূন্য। এ কোন যন্ত্রণায় শক্তি অনবরত দাহ করে চলেছেন নিজেকে। শক্তি লিখলেন–আমার হাত বন্ধ,আমার মুঠিতে রাখা বিষ/ আমার কাছে এসো না,দুই মুঠিতে রাখা বিষ/ একটি ছিল দেবার এবং একটি নিজে নেবার।

 

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

https://www.youtube.com/channelhindustan

https://www.facebook.com/channelhindustan

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *