Breaking News
Home / TRENDING / হিন্দু সংস্কৃতিতে আঘাত করে ভারত ভাঙার চেষ্টা চলছে

হিন্দু সংস্কৃতিতে আঘাত করে ভারত ভাঙার চেষ্টা চলছে

জিষ্ণু বসু   : 

সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় চোখ বুলোলেই দেখবেন কাশ্মীরি জঙ্গিরা কীভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীর মর্যাদা পাচ্ছে। একজন জঙ্গির দেহ বাড়িতে এলে তাকে ঘিরে শোকাহত পরিবার। ভারত সরকারের বিমুদ্রীকরণ, রাজ্যকে বঞ্চনার পাশাপাশি কাশ্মীরের ভারত বিরোধী ভয়ানক জঙ্গিদের ‘হিরো’ করে তোলা প্রয়োজন। এদের হিরো হিসেবে তুলে ধরতে পারলে, দেশবাসী ভুলে যাবে যে, এই বুরহান, আফজল গুরুরা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের, ডোগরাদের কী নিষ্ঠুরভাবে মেরে কাশ্মীর থেকে তাড়িয়েছিল। তাই যেসব পত্রিকার মাথায় বসে আছেন অতিবামপন্থী মানসিকতার বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের মনে প্রতিনিয়ত অনুরণিত হচ্ছে দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠা সেই শ্লোগান, ‘‘ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে, ইনসাল্লা, ইনসাল্লা, ইনসাল্লা।’’ ভারতকে টুকরো করার এই অপপ্রয়াসে দু’টি শক্তি
আজ খুব কাছাকাছি এসেছে—- জেহাদি মৌলবাদ অতিবামপন্থী শক্তি। আফগানিস্তানে তালিবানদের থেকে কাশ্মীরি জঙ্গিদের মাধ্যমে জেহাদিদের রেডিয়ো কন্ট্রোলড এক্সপ্লোসিভ আনার প্রযুক্তিগত সাহায্য করছে পশ্চিমবঙ্গের অতিবামেরা। তাই কৃতজ্ঞ জেহাদিরা। এই পারস্পরিক বিশ্বাস সর্বত্র। এই সেদিন বাদুড়িয়ার দাঙ্গার পরে যে-আন্তর্জাতিক মৌলবাদী সম্মেলন আয়োজিত হয়েছিল তার অন্যতম বক্তা হিসেবে ডাক পেয়েছিলেন কলকাতার এক মাওবাদী নেতা।
কিন্তু ভারতকে টুকরো করার সঙ্গে মা দুর্গার সম্পর্ক কী? ভারতকে টুকরো করতে হলে এখন সবচেয়ে দুর্বল স্থান হল পূর্ব ভারত। তাই মাওবাদী পোস্টারে বার বার অসছে ‘মণিপুরের আজাদি’। বাংলা-সহ পূর্ব ভারত টুকরো করতে হলে জেহাদি সন্ত্রাসবাদ হবে খুব সস্তা আর ভয়ানক অস্ত্র। কিন্তু হিন্দু বাঙালির একত্রিত হওয়ার একটি মূল শক্তিস্থল হল দুর্গা, দুর্গা পুজো, দুর্গা মণ্ডপ। বাংলাদেশে এখনও যে সামান্য সংখ্যার সাহসী হিন্দু টিকে আছে, তাঁদের ভরসা মা দুর্গা। তাই হিন্দুগ্রামে দুর্গা মূর্তি ভেঙে দিলে, দুর্গা মন্দিরে গোমাংসের টুকরো রাখতে পারলে হিন্দুরা ভেঙে পড়বে। চোদ্দো পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে পালাবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গে এপার বাংলাতেও যেখানে হিন্দুদের তাড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে, সেখানেই দুর্গা প্রতিমা ভাঙা হয়েছে। গতবছর দু’টি স্থানে দুর্গা পুজোর আগে এই লক্ষণ পরিষ্কার দেখা গেছে। আতিবামপন্থীরাও এটা বুঝেছে। এটাও বুঝেছে যে বাংলার ব্রাহ্মণ, শুদ্র, তফশিলি জাতি, উপজাতির প্রতিটি মানুষের কাছে মা দুর্গা যেমন জগজ্জননী তেমনই ঘরের মেয়ে উমা। এই বিশ্বাসে আঘাত দেওয়ার জন্যই মহিষাসুর আত্মদান দিবস পালন শুরু হয়েছিল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে, অতিবামপন্থী ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে। তাঁদের বর্ণনায় দেবী দুর্গা একজন পতিতা। তাঁকে দেবতা নামের আর্য জাতিগোষ্ঠী মহিষাসুর নামের দেশীয় রাজাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার জন্য। দলিত শ্রেণির মানুষ পরম শ্রদ্ধাভরে অপেক্ষা করে দুর্গা পুজোর দিনগুলির জন্য। তাঁদের কাছে দুর্গা পুজো মদ-মাংস খাওয়ার কিংবা গড়িমসি করে কাটানোর উৎসব নয়, পরম শ্রদ্ধার, হৃদয়ের অনাবিল ভক্তির, উপাসনার সময়, ‘মা ত্রিনয়নী দুর্গার পুজো।’ মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী হয়ে বিজয়া দশমী। এই ত্রিনয়নী দুর্গার মতো, হাতে ত্রিশূল এক প্রায় উলঙ্গ নারী স্পর্শত, বাঙালি হিন্দুর পরমারাধ্যা মা দুর্গাকে অবমাননার জন্য করা হয়েছে। আসলে বাংলা সংবাদ জগতের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এক স্বঘোষিত বিচিত্রবুদ্ধি বাবুকুলের হাতে এসেছে। তাঁরা ব্যক্তিজীবনে পরম ভোগবাদী, পেটিবুর্জোয়া শ্রেণিভুক্ত। কিন্তু বিপ্লবী বামপন্থী হল এদের ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট।’ এঁরা বিদেশি স্কচ-হুইস্কি পান করতে করতে বাস্তারের অতিবিপ্লবীদের সঙ্গে একাত্ম অনুভব করেন। ‘ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে’ খোয়াব দেখেন। নদিয়া জুরানপুরের তফশিলি প্রান্তিক চাষি মারু হাজরা পরিবারের তিনজন মানুষের মৃত্যুর খবর পরিকল্পিতভাবে চেপে দেন। আর কাশ্মীরের জঙ্গির মরদেহের ছবি দিনের-পর-দিন প্রথম পাতায় ছাপান। হিন্দু বাঙালির অন্তরের দেবতা ত্রিনয়নী মা দুর্গার কুৎসিত ছবি দিয়ে প্রচ্ছেদ বানিয়ে বিকৃত আনন্দ লাভ করেন।

 

লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *