রন্তিদেব সেনগুপ্ত
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বলেছেন, আমি সংষ্কৃতিগত ভাবে মুসলিম আর দুর্ঘটনাবশত হিন্দু। জওহরলালের এই কথা থেকে আঁচ পাওয়া যায় নেহরুপন্থী এবং বামপন্থী ও তথাকথিত সেকুলারদের হিন্দু সংষ্কৃতি সম্পর্কে তাচ্ছিল্যের মনোভাব। আসলে হিন্দু সংষ্কৃতিকে বারবার এভাবে হেয় করার চেষ্টা হয়েছে, এর ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ব্রিটিশ শাসকরা, তারও আগে মুসলমান শাসকরা চেষ্টা করেছিলেন ভারতবর্ষের মেরুদন্ডস্বরূপ এই হিন্দু সংষ্কৃতিটিকে আঘাত করতে। ব্রিটিশ শাসকরা বুঝেছিলেন, ভারতবর্ষে বিভিন্ন ধর্ম- সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করলেও সংষ্কৃতিগত ভাবে তারা হিন্দু। অতএব যদি এই হিন্দু সংষ্কৃতির ওপর আঘাত আনা যায়, তবে ভারতের সাংষ্কৃতিক মেরুদন্ড, যা আসলে ভারতের জাতীয় ঐক্য, তা দুর্বল হয়ে পড়বে। ফলে ব্রিটিশ শাসকদের পরিকল্পনাতেই স্বাধীনতার পূর্বেই ভারতবর্ষে এমন একটি শ্রেণী জন্ম নিয়েছিল যারা হিন্দু সংষ্কৃতি,হিন্দু দর্শন, হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে তাচ্ছিল্যের মনোভাব প্রদর্শন করতে শুরু করে। স্বাধীনতার পর গত ৭০ বছর এই অংশটি ভারতের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কংগ্রেস এবং বামপন্থীদের সৌজন্যে জাঁকিয়ে বসেছে। এরা মুখে নিজেদের সেকুলার বলে দাবি করে অথচ কার্যত হিন্দু সম্প্রদায়ের আবেগে যেকোনও উপায়ে আঘাত করাটাই এদের একমাত্র কাজ। ইসলামিক মৌলবাদের বিরুদ্ধে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে। এই সেকুলারপন্থীরা প্রমান করতে চান নিজেকে হিন্দু ভাবাটি আসলে লজ্জার। হিন্দু দর্শন এবং সংষ্কৃতির গভীরতর অর্থটি অনুধাবন না করেই এরা হিন্দু ভাবনাকে আঘাত করে। এক্ষেত্রে এদেশের মুসলমান বুদ্ধিজীবীদের দায় কিছু কম নয়। তাঁরাও কখনো বলেননি যে এইভাবে হিন্দু আবেগকে আঘাত করলে তা প্রকৃতপক্ষে হিন্দু-মুসলমানের দূরত্ব আরও বাড়িয়ে তুলবে। আসলে এদেশের সেকুলারপন্থিদের চিন্তাভাবনায় একটি বড় ফাঁক রয়েছে। এঁরা বুঝতে পারছেন না যে দেশে সম্প্রীতি রক্ষার দায় সব পক্ষেরই। এই দায় হিন্দুদের একার হতে পারে না। তাঁরা আরও ভুল করছেন যে হিন্দুদের সহিষ্ণুতাকে তাঁরা হিন্দুদের দুর্বলতা মনে করছেন। বুঝতে পারছেন না ক্ষোভের আগুন কী ভয়ানকভাবে বেড়ে চলেছে।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন