Breaking News
Home / TRENDING / ‘আনন্দ’-এ রাজেশ খান্নার সঙ্গে অভিনয়ের সুবাদে তারকা হতে পেরেছিলাম অমিতাভ বচ্চন

‘আনন্দ’-এ রাজেশ খান্নার সঙ্গে অভিনয়ের সুবাদে তারকা হতে পেরেছিলাম অমিতাভ বচ্চন

কমলেন্দু সরকার  :

সময়টা সত্তর দশকের প্রথম দিক। মুম্বইয়ের রাস্তায় গাড়িতে যাচ্ছেন বলিউডের এভারগ্রিন হিরো দেব আনন্দ। একটা বিশাল হোর্ডিংয়ে ফুলের মালা ঝুলছে। তা দেখে দেব সাব ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বললেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইনি কে?’ গাড়িতে বসে থাকা কেউ বললেন, ‘ইনি হিন্দি ছবির সুপারস্টার রাজেশ খান্ন।’ দেব আনন্দ নাকি বলেছিলেন, ‘দেখ ক’দিন থাকে!’
ছিলেন কিন্তু রাজেশ। বলিউডে বেশ দাপটে রাজ করে গিয়েছিলেন তিনি। সত্তরের দশকে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীর সিনেমাপ্রেমী মানুষ ছিলেন রাজেশ খান্না বলতে পাগল। তাই বলিউডের বর্ষীয়ান একদা জনপ্রিয় নায়ক মনোজকুমার বলেছিলেন, ‘রাজেশ খান্না দর্শকদের মধ্যে একটা হিস্টিরিয়া বা উন্মাদনা তৈরি করেছিলেন।’
ষাটের দশকের মাঝামঝি ‘আখরি খত’ (১৯৬৬)-এ রাজেশের আত্মপ্রকাশ। তবে অভিনয়ের শুরু তার অনেক আগেই। তখন তাঁর নাম ছিল যতীন খান্না। প্রথমে খান্না নয়, ছিলেন অরোরা। তাঁকে ছোটবেলায় দত্তক নিয়েছিলেন ওঁদেরই আত্মীয় চুনিলাল এবং লীলাবতী খান্না। কলেজজীবনে মঞ্চে অভিনয়ে হাতেখড়ি। সেইসময় তিনি নিয়মিত নাটকে অংশ নিতেন। যতীনের ক্লাশমেট ছিলেন রবি কাপুর অর্থাৎ জিতেন্দ্র। দুই বন্ধুই বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক হয়েছিলেন। তবে জিতেন্দ্র ‘ডান্সিং এবং আকশন হিরো’ হিসেবে পরিচিতি হয়েছিলেন। বলিউডের সেরা রোম্যান্টিক নায়ক হয়েছিলেন রাজেশ খান্না।
‘আরাধনা’ (১৯৬৯) থেকে রাজেশ খান্নার যুগ শুরু। সেইসময় যুব সম্প্রদায় রাজেশ খান্নার নামে পাগল ছিল। সত্তর দশক মুক্তির দশকের মধ্যেই রাজেশ আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন। তাঁর হেয়ার স্টাইল, জামাকাপড়, কথা বলা, এমনকী চলাফেরাও নকল করতেন অনেকেই।
রাজেশের নামে মহিলা ফ্যানেরা ছিলেন আরও বেশি ক্রেজি! মুম্বইয়ে শোনা, মহিলা ফ্যানেরা নিজের রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে পাঠাতেন তাঁদের প্রিয় নায়ককে!

বিবাহিত রাজেশ ফ্যানেদের এই পাগলামি বেশ উপভোগ করতেন! তিনি ডিমপল কাপাডিয়াকে বিয়ে করেছিলেন ১৯৭৩-এ। তার আগে অঞ্জু মহেন্দ্রুর সঙ্গে রাজেশের সঙ্গে জড়িয়ে কম বিতর্ক হয়নি। টিনা মুনিমের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল এই সুপারস্টারের!
‘আরাধনা’র পর রাজেশ খান্নার পর পর ১৫টি ছবি ছিল বিশাল বাণিজ্যিক সফল ছবি। এই রেকর্ড ভাঙা এখনও পর্যন্ত কোনও নায়কেরই সম্ভব হয়ে ওঠেনি! দেড়শোর বেশি ছবি করেছিলেন তিনি। প্রায় প্রতিটি ছবির গানই মুখে মুখে ফিরত দর্শকদের। বিশেষ করে, ‘আরাধনা’র ‘মেরে স্বপনো কি রানি’, ‘কাটি পতং’-এর ‘ইয়ে জো মোহাব্বত হ্যায়’, ‘দো রাস্তে’র ‘ইয়ে রেশমি জুলফে’, ‘আপ কি কসম’-এর জয় জয় শিবশঙ্কর’ ইত্যাদি হয়ে উঠেছিল সেইসময় ভাইরাল।
আরও একটা সংলাপের কথা না-বললেই নয়। তা হল—– ‘বাবুমশাই ভালবাসা অত ভাল নয়।’ কিংবা ‘ও, বাবুমশাই।’ রোয়াক কিংবা রাস্তায় সবসময়ই শোনা যেত। ‘আনন্দ’-এর এই সংলাপ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। যেমন ‘শোলে’র সংলাপ হয়েছিল। ‘শোলে’র পরই রাজেশ খান্নার ছবির বাজার খারাপ হতে শুরু করল। নতুন যুগ শুরু হল। অমিতাভ বচ্চনের যুগ।

কংগ্রেসের হয়ে একবার নির্বাচনে জিতেওছিলেন। লোকসভার সাংসদ হয়েছিলেন। তবে ওই একবারই।
হারিয়ে যেতে লাগলেন রাজেশ খান্না। ভুলে গেলেন তাঁকে। ১৯৪২-এ জন্ম বলিউডের প্রথম সুপারস্টার প্রয়াত হন ২০১২-র এইদিন অর্থাৎ ১৮ জুলাই।

 

লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *