Breaking News
Home / TRENDING / মোদির বিকল্প হয়ে উঠতে এবার ‘বুড়ো’ সাজলেন রাহুল, পড়ুন গাঁধির গো অ্যাজ ইউ লাইক

মোদির বিকল্প হয়ে উঠতে এবার ‘বুড়ো’ সাজলেন রাহুল, পড়ুন গাঁধির গো অ্যাজ ইউ লাইক

দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :

লক ডাউনের সময় সামাজিক দূরত্ব রক্ষার ঠেলায় যখন ধোপা-নাপিত বন্ধ সে সময় ভোল বদল করলেন রাহুল গাঁধি।
এতদিন স্কাইপে ভেসে উঠে দেশ ও তাঁর অনুগামীদের বার্তা দিচ্ছিলেন রাহুল, এবার রক্তমাংসের রাহুল সামনে আসতে ধন্দে পড়েছেন তাঁর অনুগামীরাও। এই কি সেই! নতুন রাহুলের চুল কুচকুচে কালো, বাঁ দিকে সিঁথি কেটে পরিপাটি করে পেতে আঁচড়ানো। দাড়ি গোঁফ নেই। এমনকি কণ্ঠস্বরটিও বাংলা সিনেমার সিনিয়র অভিনেতা ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের মত কাঁপা কাঁপা। যেন হঠাৎ করে বুড়িয়ে গেছেন রাহুল।
রাহুলের মত ভিভিআইপিদের সাধারণ ভাবে সেলুন, স্যাঁলো বা পার্লারে যেতে হয় না। তাঁদের স্টাইলিস্ট তাঁদের বাড়িতেই আসেন। এটাই স্বাভাবিক, এটাই দস্তুর। অনেকে বলছেন, রাহুলকে তাঁর বাবার মত দেখতে লাগছে। অনেকে তা মানতে নারাজ। রাহুল সুপুরুষ হলেও তাঁর পিতার মত সৌম্যদর্শন নন বলেই অনেকের অভিমত। আবার কারও কারও চোখে মনে হচ্ছে রাহুলকে বরুন গাঁধির মত দেখতে লাগছে। পেতে আঁচড়ানো, সিঁথি কাটা ঘন কালো চুল। সুবোধ বালক ইমেজ।

প্রত্যাশিত ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কেন এই মেকওভার? একসময় দলে নবীনের জয়গান গাওয়া রাহুল কি এখন সচেতন ভাবেই নিজেকে ভারিক্কি, গম্ভীর, সব মিলিয়ে একটু বয়স্ক, একটা সিরিয়াস লুক নিয়ে জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন?
স্টাইলিস্টের হাতের গুণে লুক যা হয়েছে, এখন থেকে এই রাহুলকে ‘পাপ্পু’ বলতে গেলে দু’বার ভাবতে হবে। আবার এই রাহুলও সংসদে কোনও বালকোচিত ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরা কিংবা সংসদে দাঁড়িয়ে বলা, আমি মানছি আমি পাপ্পু, অথবা চোখ টেপা, কোনওটাই মানাবে না এই নবনির্মিত থুড়ি নব সাজে সজ্জিত রাহুল গাঁধিকে।
রাহুল নিশ্চয়ই চাইবেন দেশ যেন তাঁকে সিরিয়াসলি গ্রহন করে। তার জন্য মেকওভার? পুরনোরা নাক সিঁটকোলেও রাজনীতিতে দর্শনধারী বিষয়টা কখনওই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তবে এর আগেও বহুবার রাহুল তাঁর লুকস নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। কখনও চাপ দাড়ি, কখনও স্টাব, কখনও আবার ক্লিন শেভ। তবে এবারের পরিবর্তনটা আগের পাঁচটার মত নয়, সেটুকু বুঝতে কারও অসুবিধা হচ্ছে না। ভারতীয় রাজনীতির যেমন ধরণ তাতে কি একটু বুড়োটে না হলে চলে না? এটাই কি নতুন উপলব্ধি রাহুলের? মোদির সঙ্গে লড়াইয়ের অধ্যাবসায় কি তাঁকে এই শিক্ষাই দিল শেষ পর্যন্ত? বলা মুশকিল। উল্টোদিকে সত্তর পেরোনো সাদা দাড়ির মোদি তো যোগাসনে, হাঁটাচলায়, নিজেকে ফিট দেখাতেই পছন্দ করেন। ফিট থাকতেও পছন্দ করেন নিশ্চয়ই। তাহলে রাহুল কেন নিজেকে বয়স্ক দেখাতে চান? তাঁর পিতা রাজীব গাঁধিও কম বয়েসেই দেশের দায়িত্বভার নিয়ে ছিলেন। তাঁকে তো বুড়ো সাজতে হয়নি।

রাহুলের রুপ বদল অনেক আলোচনার জন্ম দিচ্ছে ও দেবে। করোনা আক্রান্ত দেশে হঠাৎ কেন কংগ্রেস অধীশ্বরকে তাঁর স্টাইল স্টেটমেন্ট নিয়ে ভাবতে হল? কেউ তাঁকে এই বুদ্ধি দিল নাকি তিনি নিজেই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন? এই ধরনের প্রশ্ন উঠছে ও উঠবে।
এমনিতে রাহুল যখন ইংরেজিতে কথা বলেন তখন তিনি অনেক বেশি সপ্রতিভ থাকেন। হিন্দিতে কথা বলার সময় তিনি থেমে থেমে কথা বলেন। হতে পারে হিন্দি বলতে গিয়ে তাঁকে একটু ভেবে বলতে হয়। যদি হয় তাতে দোষেরও কিছু আছে বলে মনে হয় না। তিনি কি বলছেন সেটাই বড় কথা। হতে পারে ভারতীয়ত্বের ঠেলায় রাহুল ইংরাজির সাচ্ছন্দ ছেড়ে হিন্দি বলতে বাধ্য হন। কথা বলতে গিয়ে থমকে যাওয়া হয়ত তাঁর সামগ্রিক সমস্যার কারন। হয়ত কোনওদিন এসব নিয়েও ভাববেন রাহুল। তবে তারও আগে টাইমিং সেন্সটা নিয়ে যদি তিনি ও তাঁর পরামর্শদাতারা ভাবেন, তাহলে মন্দ হয় না। যে সময় প্রিয়ঙ্কা সাবান দিয়ে করকমল ধুয়ে দেখাচ্ছেন দেশবাসীকে। যে সময় সামাজিক দূরত্ব নিয়ে হু থেকে শুরু করে গোটা দুনিয়া গলা ফাটাচ্ছে। সে সময় কোন আক্কেলে স্টাইলিস্টকে ঘরে ডেকে চুলে টেরি কাটলেন সনিয়া-তনয়? অন লাইনে যদি এমন কাণ্ড করা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্য সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগে বিদ্ধ করা যাবে না রাহুলকে তবু তাঁর স্থান-কাল-পাত্রের বোধ নিয়ে প্রশ্নটি থেকেই যায়।

দুনিয়া জোড়া করোনার গ্রাসে যখন মানুষের জীবন ও জীবিকা চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মুখে, তখন একজন রাজনৈতিক নেতার পক্ষে এ হেন ব্যবহার কতটা সমীচীন? আমি কেমন ভাবে সাজব? এটা ভাববার কি সময় এখন তাঁর?
আবার একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে অনেকের আগে রাহুল দেশকে সতর্ক করেছিলেন করোনার বিপদ সম্পর্কে। তাই শুধুমাত্র রুপ বদল নয়, মোদির সঙ্গে লড়তে আরও কিছু দরকারি বদল এখনও দরকার রাহুলের।

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *