Breaking News
Home / TRENDING / বিশ্ববাংলা বিতর্কে এবার রবীন্দ্রনাথ-জীবনানন্দের ফিউজ্ন, স্বাক্ষী নন্দন

বিশ্ববাংলা বিতর্কে এবার রবীন্দ্রনাথ-জীবনানন্দের ফিউজ্ন, স্বাক্ষী নন্দন

দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :-

 

বিশ্ববাংলা বিতর্কে এবার ঢুকে পড়লেন রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ!
এমন রাবীন্দ্রিক-জীবনানন্দীয় ঘটনার স্বাক্ষী রইল দেশের সাংস্কৃতিক শহরের সংস্কৃতির পীঠস্থান নন্দন চত্বর।
কথাঞ্জলি সহ বহু গ্রন্থের রচয়িতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের বিশ্ববাংলা লোগো সম্বলিত একটি নীল-সাদা হোর্ডিং-এ দেখা গেল জীবনানন্দের আকাশলীনা কবিতার চারটি লাইন ‘সাতটি তারার মত ফুটে’ রয়েছে। সেখানে লেখা আছে, সুরঞ্জনা,
তোমার হৃদয় আজ ঘাস…
ইত্যাদি। হোর্ডিংটির ওপরের বাঁদিকে ‘থুরথুরে অন্ধ পেঁচা’র মত বসে আছে বিশ্ববাংলা লোগো। না, কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গের লোগো নয়। এটি মুকুল কথিত কোনও কোম্পানির লোগো হলেও হতে পারে! কারণ এটিতে ইংরাজি হরফে বিশ্ববাংলা কথাটি লেখা আছে। কেন্দ্র অনুমোদিত রাজ্যের লোগোতে আছে মুখ্যমন্ত্রী অঙ্কিত ‘ব’। সেখানে ইংরাজি হরফে বিশ্ববাংলার কোনও স্থান নেই। যদিও রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠান, বিজনেস সামিটের প্রচারে এই তথাকথিত কোম্পানির লোগোটিই স্থান পেয়েছে। কেন্দ্র অনুমোদিত রাজ্যের লোগো এখন ‘পঞ্চমীর চাঁদ’-এর মত ডুবে গেছে।
সে যাই হোক, আসল হোক বা নকল বিশ্ববাংলার এই হোর্ডিংয়ে কেন জীবনানন্দের কবিতা? কেউ কেউ বলছেন, ‘তোমার হৃদয় আজ ঘাস’ — এই পংক্তিতেই চোখ আটকেছে কর্তৃপক্ষের! বলা ভাল ‘ঘাস’ শব্দটিতে! আর সেই কারণেই সম্ভবত সিংহল সমুদ্র থেকে মালয় সাগর হয়ে বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগৎ পর্যন্ত মানস ভ্রমণ করে আসা কবির পংক্তিটি বিশ্ববাংলার ‘বিজ্ঞজনেদের’ মনে ধরেছে!


মনে ধরতেই পারে। গোল বেঁধেছে কবিতাংশের নিচে কবির নাম লেখার জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথকে। শেক্সপীয়ার থেকে রবীন্দ্রনাথ হয়ে জীবনানন্দ পর্যন্ত সকলেই সাহিত্যে চুরি করার ব্যাপারে কম বেশি সিদ্ধহস্ত। সাহিত্যের পণ্ডিতরা যাকে প্লেজিয়ারিসম বলেন। তাই বলে এরকম দিনে-ডাকাতি! নিজের জুনিয়রের কবিতা নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার পাপ মাথায় নিয়ে গুরুদেব অবস্থান করছেন যেন ‘হুঁকাটি বাড়ায়ে’ থতমত কেষ্টা!
অনেক বছর আগে, সেই বামফ্রন্টের আমলে একবার জীবনান্দের একটি বিখ্যাত কবিতা ভুল লিখে ব্যানারে টাঙ্গিয়ে দিয়েছিল সাহিত্য পরিষদ। সে সময় হইচই হয়েছিল খুব। এখন আর তেমন হইচই হয় না। হইচই করলেই কেউ ধমকে বলতে পারেন, আমাদের জীবনান্দ শেখাতে আসবেন না, আমাদের রবীন্দ্রনাথ শেখাতে আসবেন না।
বেদ, উপনিষদ, কুরাণ, বাইবেল, রাম, কৃষ্ণ, মুহম্মদ, যিশু, চৈতন্য, রামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে কাফকা, কামু, জঁ জেনে হয়ে সুভাষ মুখোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা, সুবোধ সরকার, জয় গোস্বামী এমনকি সন্তোষী মা’র ব্রতকথা, লক্ষীর পাঁচালী, কলমা, দুয়া, হোলি ওয়াটার সব জানা একটি শ্রেনী তৈরি হয়েছে। তাঁরা আবার ক্ষমতার অলিন্দেও বাস করেন।
তাছাড়া নন্দন চত্বরে রবীন্দ্রনাথ-জীবনান্দের এমন বেমানান ফিউজন নাকি এক বছর ধরে পড়ে আছে! (বা ছিল!) কর্তাদের কারও চোখে পড়ছে না! না কি সবাই রুপোর কাঁটা চামচ হাতে তুলে অয়দিপাউসের মত নিজের চোখে বিদ্ধ করে বলেছেন, ‘তুমি অন্ধ হও!’
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়া শুরু হয়েছে।
জীবনানন্দের কলকাতা সাপের মত পাক খাওয়ান আলোয় এখন তিলোত্তমার ধারেকাছে কিছু একটা হয়েছে। তবে এত আলো, এত নীল সাদা কিছুতেই অশিক্ষা ঢেকে রাখতে পারছে না। ঢেকে রাখতে পারছে না উদাসীনতাও।

 

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

https://www.youtube.com/channelhindustan

https://www.facebook.com/channelhindustan

 

আরও পড়ুনঃ-

 

https://channelhindustan.com/2018/01/mittal-pulls-up-the-mood-of-domestic-personalities-says-nithin/

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *