সূর্য সরকার
কথা বলে সময় নষ্ট করবেন না! চুপ করে সংগঠনের কাজ করে যান। পুলিশের সঙ্গে দলীয় ব্যাপার আলোচনা করারও কোনও প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই মিডিয়াতে বেশি মুখ দেখানোর। জনসংযোগে মন দিন। শুক্রবার কালীঘাটের অফিসে এই প্রথম তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করে এই নিদান দিলেন “ভোট গুরু” প্রশান্ত কিশোর। পাশাপাশি, কেন এমন হাল হল? জেলা ধরে ধরে কড়া শিক্ষকের মতো বৈঠকে জিজ্ঞাসা করেছেন বলে খবর।
নিজের ভাবমূর্তির ওপর আস্থা হারিয়ে, প্রশান্ত কিশোরই এখন “শিবরাত্রির সলতে” তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিধানসভা ভোটের দু’বছর আগেথেকেই সেই কাজে পুরোদমে লেগে পড়েছেন প্রশান্ত কিশোর। মমতা-অভিষেকের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পড়ে রয়েছেন কলকাতায়। ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে একাই তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিয়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন জয়ের দোরগোড়ায়। এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মুখ। কিন্তু সারধা, নারদা, রোজভ্যালি, টেট সহ একাধিক কেলেঙ্কারির দায়ে মলীন হয়েছে তাঁর ভাবমূর্তি। এবার তাই ২০২১-এর ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন । সেই চুক্তিমাফিক এদিন পরামর্শের অছিলায় প্রশান্ত কিশোর নির্দেশ দিয়েছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শুভাশিস চক্রবর্তী, অরূপ রায়দের।
আগামী বিধানসভা ভোটে মমতার প্রতি আমজনতার আবেগকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটবাক্সে বসন্ত আনার জন্য কর্পোরেট সংস্থার তরুণ-তরুণীরা বাংলার মাঠে নেমেছেন প্রশান্তের নেতৃত্বে। সেই পরিকল্পনায় প্রথমবার প্রশান্ত কিশোর উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সাংগঠনিক বৈঠকে। সেদিন আগাগোড়াই তৃণমূল ভবনের বৈঠকে প্রশান্ত কিশোর উপস্থিত থাকলেও একবারের জন্যও মুখ খোলেননি। বৃহস্পতিবারও প্রায় আধ ঘন্টা বৈঠক করেছে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে। কিন্তু সামিল হননি বিধায়কদের সঙ্গে মমতার বৈঠকে। তৃণমূলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললেও প্রশান্ত কিশোর কাজ করবেন অন্তরালে থেকেই। সাংবাদিক সম্মেলন বা প্রকাশ্য আলাপচারিতা থেকে বিরত থাকবেন তিনি। নেতাদের তেমনই নির্দেশ দিয়েছেন এই বিহারী ভোট গুরু।