চ্যানেল হিন্দুস্থান, নিউজ ডেস্ক-
যতই মারুক ঢিল, পাথর। যতই মারুক থান ইট। এমনকী, পিছন থেকে লাঠি দিয়ে জোরে মারলেও হবে না কোনও লাভ। মাথায় লাগবে না সামান্য আঘাতও। এই যেমন পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই জেলায় জেলায় ব্যস্ততা বেড়েছে পুলিশের । মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় বাধছে সংঘর্ষ। অশান্তি থামাতে দু’পক্ষের মাঝে ঢাল হয়ে উঠছে পুলিশ।
এমন সময় আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকেই। কিন্তু নয়া হেলমেটে সুরক্ষিত থাকবেন পুলিশকর্মী।আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষার সময় পুলিশকর্মীদের আহত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে এবার নিয়ে আসা হচ্ছে বিশেষভাবে তৈরি এমন হেলমেট, যা আরও অনেক বেশি মজবুত। আপাতত কলকাতা পুলিশের র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের হাতেই তুলে দেওয়া হবে এই হেলমেট। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষার পরিস্থিতির সময় আক্রান্ত হয় পুলিশও।
বেশিরভাগ সময়ই দেখা গিয়েছে, পুলিশের দিকে ছোড়া হয় ইট বা পাথর। এমনকী, সঙ্গে করে পাথর নিয়ে এসে পুলিশকে ছোড়া হয়েছে, এমনও দেখা গিয়েছে। তাতে আহত হয়েছেন বহু পুলিশকর্মী ও আধিকারিকও। কয়েক মাস আগে বিক্ষোভকারীদের হামলায় মাথা ফেটে গুরুতর আহত হন দুই পুলিশ আধিকারিক। সাধারণত আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষার সময় প্রত্যেক পুলিশকর্মী ও আধিকারিককে হেলমেট পরে যেতে বলা হয়। কিন্তু এমনও দেখা গিয়েছে যে, ইটের ঘায়ে হেলমেট খুলে পড়ে আহত হয়েছে পুলিশ। আবার হেলমেটের আবরণ পাতলা থাকার কারণেও পুলিশ আহত হয়েছে।
সেই কারণেই যাতে পুলিশ যাতে মাথায় আঘাত না পায়, তার জন্যই আরও মজবুত হেলমেট নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। যেহেতু আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষার বড় দায়িত্ব থাকে র্যাফের উপর, তাই আপাতত নীল রঙের ২৫০টি আধুনিক ও মজবুত হেলমেট দেওয়া হবে র্যাফকেই। তার জন্য কলকাতা পুলিশ খরচ করছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৫০ টাকা।এদিকে, একই সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের জন্যও প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে নিয়ে আসা হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হেলমেট। আপাতত এই ধরনের সাড়ে পাঁচশো হেলমেট নিয়ে আসছে লালবাজার। প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট ও পুলিশকর্মীদের হাতেই এই হেলমেটগুলি তুলে দেওয়া হবে। অত্যন্ত মজবুত এই নতুন হেলমেট কোনও দুর্ঘটনার হাত থেকেও মাথা বাঁচাবে পুলিশকর্মীদের। হেলমেটে লাগবে না আঁচড়ও। এর আগে র্যাফের সুরক্ষায় দেওয়া হয়েছে হাত, পা, বুক, পিঠ, কনুই ও হাঁটুর গার্ড। এবার এই নতুন হেলমেটও পলিকার্বনেটের তৈরি।
যে বস্তুটি দিয়ে হেলমেট বানানো হচ্ছে, সেটি পরীক্ষাগার থেকে পরীক্ষা করানো হবে। হেলমেটের ওজন হবে প্রায় দু’কিলো। কিন্তু সেগুলি এমনভাবে তৈরি করা হবে, যেন অত্যন্ত সুরক্ষিত ও আরামদায়ক হয়। হেলমেটের ফিতে থুতনির সঙ্গে এমনভাবে বাঁধা থাকবে, যাতে আঘাত পাওয়ার পরও তা কোনওমতে খুলে না যায়। আবার প্রয়োজন হলে যেন র্যাফ বা পুলিশকর্মী নিজেই সহজে সেই ফিতে খুলতে পারেন। আবার ফিতেও যেন এমন বস্তু দিয়ে তৈরি হয়, যা ঘষা লেগে গালে সমস্যা না হয়। পাথর বা ইট লাগলেও যেন হেলমেটে কোনও আঁচড় না লাগে। সংঘর্ষের সময় এই হেলমেট যেন মাথা থেকে খুলে না যায়। আবার হেলমেটে যেন কান ঢাকারও ব্যবস্থা থাকে। কোনও বস্তু এসে যেন কানে আঘাত না করতে পারে।
কিন্তু এমন ছিদ্র থাকবে, যাতে শোনার ক্ষেত্রে সমস্যা না হয়। ঘাড়েও যাতে আঘাত না লাগে, সেই ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিষয়টিও ভাবা হয়েছে। একটি হেলমেট একাধিক র্যাফ কর্মী ব্যবহার করতে পারেন। তাই হেলমেটের ভিতরদিকে থাকবে ব্যাকটেরিয়া নিরোধক কাপড়। পরবর্তীকালে এই হেলমেট অন্যান্য পুলিশকর্মীদেরও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।