চ্যানেল হিন্দুস্তান, বিনোদন ডেক্স,
টলিউডের ছটফটে প্রাণবন্ত মেয়েটা নিজেও বোঝেনি কখন সে সকলের মনে এতটা জায়গা করে নিয়েছিল। তাই তো যেদিন মাঝরাতে ভুয়ো খবর রটল ঐন্দ্রিলা আর নেই, সেদিন বিনিদ্র রাত জেগেছিল বাংলা। সবাই প্রার্থনা করেছিল এই খবরটা ভুল করে দিও ঠাকুর। সেদিন ভগবান মুখ তুলে চাইলেও, শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালে রবিবার ১২টা ৫৯ নাগাদ তাঁকে মৃত ঘোষণা করলেন চিকিৎসকরা। সকলকে কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হয় ঐন্দ্রিলা।
ঝুমুর’ নামক একটি সিরিয়াল দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন ঐন্দ্রিলা। এই সিরিয়ালেই তাঁর বিপরীতে দেখা গিয়েছিল সব্যসাচী চৌধুরীকে। ঝুমুর ছাড়াও ঐন্দ্রিলাকে একাধিক জনপ্রিয় সিরিয়ালে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম হল জীবন জ্যোতি, জিয়ন কাঠি, ইত্যাদি। এছাড়া তিনি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও বেশ কিছু কাজ করেছেন, যার মধ্যে আছে ভাগাড়, পাঁচফোড়ন ২, ইত্যাদি।
আদতে বহরমপুরের মেয়ে তিনি। বাবা আর দিদি পেশায় ডাক্তার। আর মা নার্সিং স্টাফ। তবে স্বপ্নপূরণে গোটা পরিবার এসেছিল কলকাতায় তাঁর সঙ্গে। টলিউডে পা রাখার আগেই অবশ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে হয় বোনম্যারো ক্যানসার। ওই বয়সেই শুরু তার লড়াই।
তবে পিছু ছাড়ল না বিপদ। ফের ফুলফুসে ক্যানসার ধরা পড়ল। অপারেশন হল, কেমো হল, সুস্থও হলেন। আবার কাজে ফিরলেন। ওয়েবসিরিজ ভাগাড়ে কাজ করলেন। ২০২২ সালে ১ নভেম্বর রাতে আচমকা ব্রেন স্ট্রোক। ভর্তি হলেন হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। উন্নতি হচ্ছিল শারীরিক অবস্থার। কিন্তু আচমকাই ছন্দওপতন, রবিবার চলে গেলন সেই চিরঘুমের দেশে, যেখান থেকে তিনি হয়তো সকলকে দেখবেন, তাঁকে আর কেউ দেখবে না।
তবে ‘ফাইটার’রা কিন্তু হারিয়ে যায় না। বরং থেকে যায় সকলের মনে সারাজীবন। যেভাবে ঐন্দ্রিলাও থাকবেন আমাদের মনে। তাঁর হার না মানার প্রবণতাকে কুর্নিশ জানাবে সমাজ। কেউ অসুস্থ হয়ে যখন ভাববে এই বুঝি জীবনের লড়াই শেষ হল, তখনই অনুপ্রেরণা হয়ে ভেসে উঠবে ঐন্দ্রিলারই মুখখানি।