Breaking News
Home / TRENDING / নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য

এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে মনে হলো, এই বাজেট অন্ধ্র ও বিহারের রাজ্যবাজেট হয়ে গেছে! সবচেয়ে খারাপ বিষয় হচ্ছে, অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নাইডু কে খুশি করতে গিয়ে দেশের মানুষের করের টাকাকে সঠিক খাতে ব্যাবহার করলো না কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন এটা আমি বলছি? যখন জগনমোহন রেড্ডি অন্দ্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি রাজ্যসভায় বিজেপিকে সাহায্য করতেন। তখন জগনমোহন, চন্দ্রবাবু নাইডুর স্বপ্নের প্রকল্প, আমরাবতী প্রকল্পকে প্রায় বাতিলই করে দিয়েছিলো। অর্থাৎ জনগণের করের টাকায় তৈরি আমরাবতী প্রকল্প সেই সময় আর এগোচ্ছিল না। কিন্তু আবার যেই চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারে ফিরলেন সেই আমারাবতী প্রকল্প জেগে উঠলো! এবার বাজেটে কেন্দ্র সরকার ১৫ হাজার কোটি টাকা এই প্রকল্পে বরাদ্দ করেছে।

তাহলে জগনমোহন কে খুশি করতে গিয়ে জনগণের করের টাকা নষ্ট করা হলো। আবার চন্দ্রবাবু নাইডুকে খুশি করতে গিয়ে জনগণের করের টাকা আমারাবতী প্রকল্পের জন্য বরাদ্ধ করা হলো। এটা তো কোনও কেন্দ্র সরকারের নীতি হতে পারে না। আর বাজেটে বিহারের জন্য যত গুলো প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, গত ৫০ বছরে এত বাজেট বিহারের জন্য ঘোষণা করেনি কেন্দ্র। কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের কী হবে? যে মনিপুর গত একবছর ধরে জাতি দাঙ্গায় জ্বলছে, তাদের কী হবে! আসলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা ভাবনা নেই। তিনি না ভাবেন মধ্যবিত্তর কথা, তিনি না ভাবেন গরিবের কথা।
আবার এই বাজেটে কর্মসংস্থান নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কর্মসংস্থান নিয়ে তো কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কারণ নেই! কারণ গত দশ বছরে তো ২০ কোটি লোকের চাকরি হয়ে গিয়েছে! তাহলে আবার নতুন করে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিতে হচ্ছে কেন? তাহলে কি চাকরি হয়নি? তাহলে দশ বছর আগে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তার ফল শূন্য? তাহলে ধরে নিতে হবে এবারের বাজেটে যে কর্মসংস্থান নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলো তার ফলও শূন্যই থাকবে।

এই বাজেটে ক্যাপিটাল গেইন-এর কথা বলা হয়েছে যার কোনও অর্থ নেই। সমস্ত শেয়ার মার্কেট বিশেষজ্ঞরাই বলছেন, কেউ লগ্নি করতে ভরসা পাবেন না যদি ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স বসানো হয়। আসলে নির্মলা সীতারামন কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা ভাবনা নেই। তিনি জানেন না রাষ্ট্রকে কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। তিনি নরেন্দ্র মোদির খেয়াল খুশি মতো একধরনের বাজেট তৈরি করেন। কিছু কিছু সময়ে কোনও মন্দিরে প্রজেক্টে টাকার কথা বলেন, তারপর আমরা দেখতে পাই রামমন্দিরে ছাদ দিয়ে জল পড়ছে। রামমন্দিরে আশেপাশে অধিকাংশ রাস্তা ধ্বস নেমেছে।

আসলে এবারের বাজেটটা দিশাহীন। কিন্তু প্রশ্ন বাজেটেও কি সাম্প্রদায়িকতা? প্রজেক্টের মধ্যে শুধু কেন মন্দির! শুভেন্দু অধিকারী তো বলেই দিয়েছিলেন, যে সবকা সাথ সবকা বিকাশ নয়, বিজেপি হিন্দুদের পার্টি হতে চায়। নির্মলা সীতারামন তার বাজেটে সেটারই প্রমান দিয়ে দিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, নরেন্দ্র মোদির দুই প্রিয় শিল্পপতি আম্বানি ও আদানিদের কোম্পানিতে বেশিরভাগ লগ্নি আসে তো মুসলিম দেশগুলো থেকে।তাহলে তারা কী ভাববে? আদানি আম্বানিদের কি মুসলিম দেশ গুলোকে ত্যাগ করতে হবে?

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

শুধুমাত্র শুদ্ধিকরন আর বাংলাদেশ নয়, মমতার যে কথায় কান দিল না মেইনস্ট্রিম মিডিয়া

“ভর্সা যেন না পায় কোনও দাঙ্গামুখো হতচ্ছাড়া, সবাই মিলে বেঁচে থাকার ভর্সা তাদের করুক তাড়া’ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *