কমলেন্দু সরকার :
কুমায়ুন বলতেই চোখে ভাসে নৈনিতাল, রানিখেত, চৌকরি, মুনশিয়ারি, বিনসর ইত্যাদি জায়গা। কুমায়ুন ঘোরার শুরু হতে পারে দিল্লি কিংবা কাঠগোদাম থেকে।
নৈনিতাল: কুমায়ুনের জনপ্রিয় শৈল শহর। পাহাড়-ঘেরা নৈনি লেক অতীব সুন্দর! কাছেই নয়না দেবীর মন্দির। এখানেই সতীর বাঁ চোখ পড়েছিল। তাই সতীপীঠ বলা হয়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে বহু পাহাড় দেখা যায়। ২১ কিমি দূরে ভীমতাল। চমৎকার জায়গা।
আলমোড়া: নৈনিতাল থেকে দূরত্ব ৬৩ কিমি। চারদিকে দেবদারু আর পাইনের সারি। চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য!
রানিখেত: এখান থেকে দেখা যায় নীলকণ্ঠ থেকে নন্দাকোট। স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে নন্দাদেবী। ২০০-২৫০ কিমি জুড়ে কত সব বরফ পাহাড়। তার ওপর পাইন অরণ্য। তাই বার বার গেলেও রানিখেতের আকর্ষণ এতটুকু কমে না!
কৌশানি: বিনসর থেকে দূরত্ব ৬৫ কিমি। চুপচাপ বসে হিমালয় উপভোগ করার আদর্শ জায়গা। সারাদিন ধরে চলে পাহাড়ে পাহারে রঙের খেলা! মহাত্মা গান্ধির প্রিয় জায়গা ছিল। এখানে আছে গান্ধি আশ্রম। আশ্রম থেকে চারিদিকের ভিউ অপূর্ব!
চৌকরি: কৌশানি থেকে ৮৫ কিমি মতো। যাওয়ার পথে মাঝে পড়ে বাগেশ্বর। সরযূ নদীর ধারে মহাদেবের লীলাক্ষেত্র। এখানকার মন্দির স্থাপত্য ভীষণ সুন্দর। বাগেশ্বর দেখে ৫০ কিমি গেলেই পৌছে যাওয়া যায় চৌকরি। চৌকরি হিমালয়ের কোলে একটুকরো স্বর্গ!
মুনশিয়ারি: চৌকরি থেকে থল, বিরথি, কালামুনি টপ পেরিয়ে মুনশিয়ারি ১৪০ কিমি। বরফ-মোড়া পঞ্চচুল্লির পায়ের গোড়ায় মুনশিয়ারি। এখানকার সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোরম।
পিথোরাগড়: মুনশিয়ারি থেকে ১২৭ কিমি। পিথোরাগড় হল কুমায়ুনের কাশ্মীর। নির্জন অরণ্যের ভিতর দিয়ে হাঁটাপথ থলকেদার। ১৬ কিমি মাত্র। যাঁরা রোমাঞ্চ ভালবাসেন তাঁদের কাছে ঘুর্যে গিয়ে হাতে স্বর্গ পাওয়ার মতো!
লোহাঘাট থেকে মায়াবতী: লোহাঘাট ছিল চাঁদ রাজাদের সাংস্কৃতিক রাজধানী। ঘুরে নেওয়া যায় আবট মাউন্ট। হিমালয় দেখার আদর্শ জায়গা। মনে হবে যেন হ্যান্ডশেক দূরত্বে পাহাড়্গুলো! প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে সময় কাটানোর আদর্শ স্থান।
লোহাঘাট থেকে আট কিমি দূরে মায়াবতী। স্বামী বিবেকানন্দের বড় প্রিয় জায়গা ছিল। মায়াবতী গাছগাছালি ভরা সবুজে মোড়া। দূরে কত না পাহাড়! এখানে এলে মন চাইবে ফিরে যেতে! মায়াবতী শুধু বেড়ানোর জস্যগা নয়, এটা ধ্যানকেন্দ্রও। স্বামী বিবেকানন্দ তাই করতেন।
তবে মায়াবতী থাকতে হলে রামকৃষ্ণ মিশনে খোঁজখবর কতে থাকবার ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে কোনও হোটেল নেই। তবে লোহাঘাটে থেকে ঘুরে নিন। এখানে ভাল ভাল বহু হোটেল আছে।
কীভাবে যাবেন: হাওড়া কিংবা শেয়ালদা দিল্লির ট্রেন। দিল্লি থেকে গাড়ি নিয়ে যাওয়া। দিল্লি থেকে ট্রেন বা বাসে যাওয়া। লখনউ থেকে কাঠগোদাম এক্সপ্রেস। হাওড়া থেকেও কাঠগোদাম এক্সপ্রেস ছাড়ে।
কোথায় থাকবেন: কুমায়ুন টুরিজিমের লজ বুকিং করতে হলে– কুমায়ুন মণ্ডল বিকাশ নিগম, ৭/২সি চক্রবেড়িয়া রোড (সাউথ), ভবানীপুর, কলকাতা- ৭০০ ০২৫। ফোন: ০৩৩ ২৪৮৬ ৮২৯৫ এবং ৯৩৩৯৮ ৭৮৯৯৫। ওয়েবসাইট kmvn.gov.in
