দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
পার্থর প্রতিক্রিয়া নেই কেন!
মহাসচিব কী মৌনী নিলেন না কী!
মুকুল রায় তাঁর জেল খাটার ভবিষ্যদ্বাণী করার পর থেকে শিক্ষামন্ত্রীর আড়ালে তাঁকে এই সব প্রশ্নই করছে বিরোধীরা তো বটেই এমনকি তৃণমূলেরও একাংশ।
মুকুল রায় তাঁকে চিট ফান্ড কাণ্ডে যুক্ত বলেছেন। এমনকি প্রয়াগ নামক অন্যতম অভিযুক্ত চিটফান্ডটির সঙ্গে পার্থর দহরম মহরমের কথাও বলেছেন। বলেছেন, প্রয়াগ কর্তার পাশে বসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় চিটফান্ডে লগ্নি করার পরামর্শও দিয়েছেন! মুকুলের এমন অভিযোগের পরও চুপ পার্থ! অন্তত, মঙ্গলবার রাত ১০ টা পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের সামনে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তিনি। একমাত্র এক সুহৃদ রাজনীতিকের কাছে প্রশ্ন এড়ানো উত্তর দেওয়া ছাড়া। সুহৃদের প্রশ্ন এড়াতে মুকুলকে হাফ নেতা বলে কাজ সেরেছেন বলে খবর।
প্রশ্ন উঠছে, কেন?
তৃণমূলে পার্থই একমাত্র মুখপাত্র। অন্ততঃ বাংলাভাষায় প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্যে তো বটেই!
দলের যে কোনও খুঁটিমাটি বিষয়েই মুখ খোলেন পার্থ। এ হেন নিয়মিত প্রতিক্রিয়া দেওয়ায় অভ্যস্থ পার্থ এমন দিনে চুপ কেন! যেদিন তাঁর সততা নিয়ে ‘ভরা বাজারে’ (পড়ুন জনসভায়) প্রশ্ন তুলেছেন মুকুল।
যাঁরা এত অবধি পড়েই মনে মনে বলছেন, পার্থ মুকুলকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বলেই চুপ করে আছেন! কিন্তু এই লজিক এখন আর খাটছে না। সে পথ নিজেই বন্ধ করে রেখেছেন পার্থ। মুকুল দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করার দিন থেকে মুকুলের সব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়ে এসেছেন পার্থ। এমনকি চাটনিবাবুর মত অনেক শব্দেরও যোগান দিয়েছেন রাজনীতির আড্ডায়! এখন তিনি নিজে যখন আক্রমণের নিশানা তখন তাঁর চুপ করে থাকা কতটা যুক্তিগ্রাহ্য!
কেউ কেউ মনে করছেন, পার্থ চাইছেন তাঁর দল তাঁর হয়ে মুখ খুলুক। যদিও মঙ্গলবার রাত ১০ টা পর্যন্ত এমন কিছু হয় নি। দলের মহাসচিবের সম্মান রক্ষার্থে এগিয়ে আসেন নি কোনও নেতাই। এই ব্যাপারে দলনেত্রীও কাউকে কিছু বলার নির্দেশ দেন নি। পার্থর অপমান পার্থ একাই হজম করছেন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে সত্যিই কী পার্থর কিছু বলার নেই! দু’দিন আগেও মুকুল এমন মন্তব্যই করেছিলেন। বলেছিলেন, পার্থই চিটফান্ডের পাণ্ডা। পার্থর অতি ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, প্রথমে পার্থ ঠিক করেছিলেন, নিজে কিছু না বললেও, তাঁর ক্লাব নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের কোনও কর্মকর্তাকে দিয়ে বলাবেন। তবে শেষ পর্যন্ত পার্থ তা করেন নি। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি মুকুলের বিরুদ্ধে অনুযোগ করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। বলেছেন, ‘কেন মুকুল এসব বলছে!’ তিনি যে দলনেত্রীর নির্দেশেই মুকুলের বিরুদ্ধে বাঁকা কথা বলছেন, ঘনিষ্ঠমহলে এমনটাও বলেছেন বলে খবর।
সে যাই হোক, এতবড় অভিযোগের পরেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা তাঁর দলের চুপ করে থাকা, পার্থ বা তাঁর দল সম্পর্কে বিরূপ ধারণার জন্ম দিচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
তৃণমূলের নীরবতায় উৎসাহিত মুকুলের অনুগামীরা শচীনদেব বর্মণের বিখ্যাত গানের দু’কলি গেয়ে উঠছেন!
তাঁরা গাইছেন, “যে নদী রয়েছে ভরাট কাণায় কাণায় / হয় যদি শুন্য হঠাৎ তাকে কি মানায়?
চিটফান্ডের সঙ্গে সংযুক্তির অভিযোগের পরেও শিক্ষামন্ত্রীর চুপ করে থাকা মানায় কি না তা তিনিই বলতে পারবেন।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan