দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
আগামী ৮ তারিখ, শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির বৈঠক। সাংসদ সুলতান আহমেদের আকস্মিক মৃত্যুতে বৈঠকের দিন পরিবর্তন হলে আলাদা কথা, না হলে কোর কমিটির বৈঠকে থাকবেন মুকুল রায়ও। তবে তার আগে আকস্মিকভাবে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে কর্মরত একজন ডোম। কিন্তু কেন?
কয়েকদিন আগে তৃণমূলে দোদুল্যমান মুকুল রায় তাঁর গাড়ি করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। কোনও বিশেষ কাজে কিছুক্ষনের জন্য মুকুল গাড়ি থেকে নামেন। তাড়াহুড়োতে তাঁর একটি মোবাইল ফোন পাঞ্জাবির পকেট গলে পড়ে যায়। মুকুল খেয়ালও করেন না। তাঁর অন্য ফোনগুনিতে ফোন আসে। তাঁর সঙ্গীরা প্রাথমিক কথা বলে যদি ‘দাদা’কে দিতে হবে মনে করেন তাহলে মুকুলের হাতে ফোন ধরিয়ে দেন। পরপর ফোন ও বিবিধ ব্যস্ততায় মুকুল আর খেয়ালই করেন না যে তাঁর আর একটি ফোন নেই।
তবে সেই খোয়া যাওয়া ফোনটিও এতক্ষণ থেমে থাকেনি। বহু মানুষ সেই ফোনটিতেও মুকুলকে ফোন করতে থাকেন আর ফোনটি হাসপাতাল চত্বরের রাস্তায় পড়ে পড়ে বাজতে থাকে।
সেই সময়ই সুদৃশ্য, বড় মাপের ফোনটি চোখে পড়ে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের এক ডোমের। সাধারণত হাসপাতালের মর্গে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের ডোম বলা হয়।
ফোনটি পেয়ে তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা তাঁর। ফোনটি নিরন্তর বেজেই চলেছে। আধুনিক ফোন ব্যবহারেও তিনি খুব একটা দড় নন। কী করা যায়! হাসপাতালেরই একজনের সাহায্য নিলেন। ফোনের স্ক্রীনে ভেসে ওঠা অনেকগুলি মিসড কলের একটিতে ফোন করলেন তিনি। জানালেন ঘটনা।
তাঁরা তখনও জানেন না এই ফোনের মালিক মুকুল রায়। কিছুক্ষন পর আর একটি ফোন এল। যিনি করেছেন তিনি অনুরোধ করলেন, যদি দয়া করে ফোনটি অমুক ঠিকানায় দিয়ে যান! অনুরোধ রাখার মত সময় বা ইচ্ছা তখন কোনওটাই ছিল না হাসপাতালের এই কর্মীর। জানিয়ে দিলেন তাঁর কোথায় বাড়ি আর তাঁর বাড়ি থেকেই যেন ফোনটা সংগ্রহ করে নেওয়া হয়।
তাই হল। মুকুল রায় ফোন করলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতাকে। ফোন উদ্ধারকর্তার যেখানে বাড়ি ইনি সেই এলাকার নেতা। তিনি ফোন করলেন আর একজন নেতাকে। অচিরেই পাওয়া গেল ফোন।
এলাকার তৃণমূল নেতাকে ফোনটি ফিরিয়ে দেওয়ার সময় উদ্ধারকারী জানতে পারলেন যে তিনি যে সে লোকের ফোন উদ্ধার করেননি। এদিকে তো হল মধুরেণ সমাপয়েৎ। কিন্তু অন্যদিকে? সেদিকে তখন কৌতুহলের শেষ নেই! মুকুলের ফোনে কারা ফোন করল? কারা তাঁকে নিয়মিত ফোন করে? ফোনের কল-লিস্টে কাদের নাম রয়েছে? বিজেপির কোন নেতার ফোন আসে জানার চেয়েও আগ্রহ বেশি তৃণমূলের কোন কোন নেতা যোগাযোগ রাখছেন মুকুলের সঙ্গে?
ছোট নেতারা চাইছেন মুকুল সম্পর্কে কোনও খবর যদি বড় নেতাকে দিতে পারি তাহলে পুরস্কার মিলবে। আর বড় নেতারা ভাবছেন মুকুলকে নিয়ে যদি কোনও ‘এক্সক্লুসিভ’ নেত্রীর কানে তোলা যায়!
মুকুল মহল অবশ্য বলছে, ডন কো পাকাড়না মুশকিল হি নেহি, নামুনকিন হ্যায়।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan