দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
মুকুল রায় দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন। তাঁর ‘বাচ্চা ছেলে’ মন্তব্য তাঁর বিদায়কে কিছুটা ত্বরান্বিত করল। মুকুল বলেছেন যে এদিন তিনি বাধ্য হয়ে এই ঘোষণা করলেন। কেন বাধ্য হলেন, তা তিনি পরে জানাবেন বলেছেন। সে যাই হোক নবমী নিশিতে যে ঘোযণা করার কথা ছিল, পঞ্চমীর চাঁদ ওঠার অনেক আগেই সেই ঘোষণা করে দিলেন মুকুল। এদিন সকালেই, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের বিসর্জনের ঢাক নিজেই বাজিয়ে দিলেন তিনি। বেলা বাড়তে দেবীর আবাহনের আগেই মুকুলের বিসর্জনের পালা সাঙ্গ করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ৬ বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করে দিলেন তাঁকে। রাজ্য রাজনীতির ঘটনাবহুল পঞ্চমীতে একটি প্রশ্ন অজানা রয়ে গেল বলে মনে করছেন অনেকে। তা হল অতঃ কিম? এবার কী করবেন মুকুল!
তিনি বলেছেন, পরে জানাবেন। এমনিতে কম কথার মানুষ মুকুল রায় অফিসিয়াল কোট ছাড়া কিছু বলেন না। অতি ব্যক্তিগত আড্ডার কথা আলাদা। যদিও কিছু বলেন, বলেন গুঢ় ইঙ্গিতে।
এমনিতে রাজনীতিকদের সঙ্গে সাংবাদিকদের সম্পর্ক মূলত পেশাদারিত্বের। তবু তার বাইরেও কিছু রসায়ন রয়ে যায়। রাজনীতিতে যেমন, তেমন সাংবাদিকতাতেও নিজের হাতে তৈরি করা সাম্রাজ্য ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার উদাহরণ বিস্তর। কিছুদিন আগেই একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের অতি পরিচিত মুখ বেরিয়ে এলেন তাঁর নিজের হাতে তিল তিল করে জনপ্রিয় করে তোলা একটি চ্যানেল ছেড়ে। শোনা যায়, যে স্টুডিয়োতে বসে প্রতি সন্ধ্যায় তিনি মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতেন দেশের অগণিত দর্শককে, একদিন সেই স্টুডিয়োতে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি! এই রাজ্যেও এমন উদাহরণ কম নেই। প্রায় এক দশক আগে নিজের সাজানো বাগান পিছনে রেখে সটান বেরিয়ে আসতে হয়েছিল বাংলা সাংবাদিকতার এক জায়ান্ট ফিগারকে। এমন পরিস্থিতিতে একটি আপ্ত বাক্য প্রয়োগের খুব চল আছে– ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠান বড় কিংবা নেতা নয়, দল বড়। তবু কেউ কেউ প্রতিষ্ঠানের বা দলের নির্ধারিত সিলিং-এর মাপে নিজেকে আটকে রাখতে পারেন না। যাঁরা মাপে মাপে মিলে যান, তাঁরা শান্তিতে থাকেন!
সে যাই হোক, মুকুল এদিন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে, সংবাদ মাধ্যমের কথা টেনে এনেছেন। সৌরভ গুহ, রাজনৈতিক সাংবাদিকতায় এখন পরিচিত মুখ। সৌরভের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বলেছেন, সৌরভ যখন তাঁর পুরোন চ্যানেল ছেড়ে নতুন চ্যানেলে যোগ দেন, তখন তাঁর কেমন লেগেছিল?
আপাতভাবে উত্তর এড়ানো মনে হলেও, মুকুলের ইঙ্গিত প্রবণতা যাঁরা জানেন, তাঁরা এর মধ্যে মুকুলের নতুন দলে যাওয়ার ইঙ্গিতই দেখছেন। কেন? সৌরভ তাঁর পুরোন প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেখানে গেছিলেন সেটি একটি নতুন চ্যানেল। সেই চ্যানেলের নামে কৌলীন্য থাকলেও সেটি তখন সবে নতুন একটি বাংলা চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। ঠিক যেমন জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি নতুন দল হলেও, তাঁর নামে তৃণমূল কংগ্রেস জড়িয়ে আছে।
সুতরাং, অতঃ কিমের উত্তর মুকুল এদিন দিয়েছেন। গুঢ়, সুচারু ইঙ্গিতে।
কি বললেন মুকুল রায, দেখুন ভিডিও
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan