দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
খাতায় কলমে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই মুকুল রায় বলছেন, যে তিনি মনে করেন না বিজেপি সাম্প্রদায়িক শক্তি। বিজেপিতে যোগদানের দিনেও মুকুল একই কথা বলেছেন। বরং আরও একটু এগিয়ে মুকুল বলেছেন, বিজেপি ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি। কথাটা সহজে বলা গেলেও রাজ্যের সংখ্যালঘুদের এই কথা বোঝানো সহজ কাজ নয়। স্বাধীনতার পর থেকে দেশ জুড়ে বিজেপিকে বা তাদের পূর্বসুরীদের গায়ে সাম্প্রদায়িক তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। এই রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। বরং বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারকে অচ্ছুৎ করে রাখার প্রবণতা এই রাজ্যে একটু বেশি। সঙ্ঘ বা বিজেপির তাত্ত্বিক নেতারা এমনটাই মনে করেন। তাঁরা মনে করেন বিজেপি বা আরএসএস সম্পর্কে এমন একটি বিরুপ ধারণা কংগ্রেস ও বামেদের তৈরি করা এবং তাদের সমমনস্ক কিছু সংবাদমাধ্যমের বদান্যতায় তা দশকের পর দশক ধরে জনমানসে গেঁথে বসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের সঙ্ঘ নেতা ড. জিষ্ণু বসু যেমন মনে করেন সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধে এই ‘অপপ্রচার ‘ এদেশে খুব সুচারু ভাবে হয়েছে এবং সাফল্যও পেয়েছে। কিছুদিন আগেই কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী পালন নিয়ে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। আরএসএস-এর নজরুল-জয়ন্তী পালনের খবর বাইরে আসতেই কবির পরিবার থেকে বলা হয় নজরুলকে নিয়ে রাজনীতি করছে আরএসএস। যদিও বাস্তব হল নজরুল, সঙ্ঘের যে কয়েকজন প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তি আছেন তাঁদের মধ্যে একজন। এটা সঙ্ঘ বা বিজেপির একপ্রকার ব্যর্থতা তারা নিজেদের যেমনটা মনে করেন তেমন ভাবে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেননি বরং যে প্রচারকে তাঁরা মিথ্যা প্রচার বলেন, সেই প্রচারেরই শিকার হয়েছেন।
মুকুল যেমন ভাবে বলছেন যে বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়, রাজনৈতিকভাবে বলা এই কথাটি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজনীতির জন্য খুব জরুরী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
মুকুল বলছেন আর তাঁরই এক অনুগামী এই কঠিন কাজটি করতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন। কাসেম আলি। এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় পাত্র। এক সময় উত্তর ২৪ পরগনার যে কোনও সভা হলেই মমতার মুখ থেকে শোনা যেত ‘আমার ছোট্ট কাসেম’। সেই কাসেম আর ছোট নেই। মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ার পর মুকুলের একান্ত অনুগামী কাসেম এখন শুরু করেছে মানুষকে বোঝান যে কেন, কোন যুক্তিতে মুকুল বলছেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক শক্তি নয়। সত্যিই কী বোঝাতে পারবেন কাসেম! তাঁর কথায়, “আর কতদিন লোকে নাটকে ভুলে থাকবে বলতে পারেন! মুসলমানদের দেখিয়ে দেখিয়ে হিজাব পরা, নমাজ পড়া সব আছে কিন্তু মুসলমানদের চাকরি নেই। কতদিন শুধু ভোটব্যাঙ্ক হয়ে বাঁচবে মুসলমানরা!” তাঁর বক্তব্য, “অমিত শাহ তো রাষ্ট্রবাদের কথা বলছেন, দেশকে ভালবাসার কথা বলছেন। মুসলমানের মত দেশকে ভালবাসা সহজ নয়। যে মুসলমান দেশকে ভালবাসে না, সে মুসলমানই নয়।”
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan