মধুমন্তী :
“শরীর থাকলে অসুস্থতাও থাকবে। এ আর নতুন কী! তা নিয়ে অত মাথা ঘামালে চলে নাকি! তাও আবার চাকরির জায়গায়”— প্রায় এরকমটাই শুনতে হল এক মহিলা অফিস কর্মীকে।
চিত্রটা ছিল খানিকটা এরকম, সকাল থেকে পিরিয়ডের যন্ত্রণায় প্রায় নাজেহাল অবস্থা এক মহিলার। তবুও অফিসে যে আসতেই হবে। তাই অগত্যা! কিন্তু অফিসে এসেও কাজে মন দিতে পারছেন না। কারণ, ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তুমুল পেটের যন্ত্রণা। পেনকিলারেও সারছে না। উপায় না দেখে টেবিলে রাখা জলের বোতলে, খানিক গরম জল ভরে সেঁক দিতে লাগলেন। কিন্তু এক পুরুষ কোলিগের সামনে সেই ছবি ধরা পড়তেই প্রশ্ন, এছাড়া কি আর অন্যকোনও উপায় নেই?
মহিলা বলেন, “না, মানে যন্ত্রণা থেকে সামান্য উপশম পেতে।”
কাজের ডেস্কে বসে গরম জলের সেঁক! হতভম্ব হয়ে প্রায় আকাশ থেকে পড়ার মতো ভান করে চলে গেলেন সেই পুরুষ কোলিগ।
শুধু তাই নয়, সেই ঘটনার খবর ইতিমধ্যেই তখন পৌঁছে গিয়েছে অফিসের এইচআর-এর কানে।
প্রায় ১০ মিনিট পর মহিলার ফোনে একটি মেসেজ করে অফিসের এইচআর জানতে চান, সব ঠিক আছে কিনা! বেশি সমস্যা হলে বাড়ি চলে যেতে পারেন।
পিরিয়ডের যন্ত্রণা হচ্ছে বলে গরম জলের সেঁক দিচ্ছেন। কারণ, ব্যথা পেনকিলারেও কমছে না। তবে বাকি সব ঠিক আছে বলে জানান ওই মহিলা।
কিছুক্ষণের জন্যে একেবারে চুপ হয়ে গেলেন এইচআর। তাঁর দাবি, আমি নাকি অবান্তর কথা বলছি। যার কিছুক্ষণের মধ্যে আমাকে মিটিংয়ে ডাকা হলেও আমি যেন আমার সমস্যার কথা মিটিংয়ে না বলি সে ব্যাপারেও আমায় সতর্ক করে দেন ওই অফিসের মহিলা এইচআর।
অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা তাঁদের শারীরিক সমস্যা হলে তার সমাধানের পথে হাঁটেন। কারওর পিঠে ব্যাথা হলে, স্পেশাল ব্যাকরেস্ট নেন তো কেউ হাতে ব্যথা হলে রিস্ট ব্রেস নেন। এরকম হাজারো সমস্যা হয় সকলের। শুধু পিরিয়ডের যন্ত্রণাতে গরমজলের বোতল ব্যবহার করলেই যত সমস্যা। কেন?
একুশ শতকে দাঁড়িয়েও পিরিয়ডের মতো খুব স্বাভাবিক একটা বিষয় নিয়ে মানুষ এখনও কেন এত লজ্জায়? কেন এত ইতস্তত বোধ করেন ‘পিরিয়ড’ এই শব্দটার সম্মুখীন হতে! এরকম একটা সমস্যায় কেন পুরুষ কোলিগরা সামান্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন না! প্রশ্ন ছুড়ে দেন ওই মহিলা।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন :
পিরিয়ড-এর ছুটি চালু করল মুম্বইয়ের এক মিডিয়া কোম্পানি (দেখুন ভিডিয়ো)