কমলেন্দু সরকার :
বিয়ে নিয়ে এমন অনেক ঘটনার কথা শোনা যায় যা শুধু সিনেমায় হয়। কিন্তু তা যে বাস্তবেও ঘটে সে আর ক’জনা জানে! ছিলেন এক নামী কবি। বাংলা কবিতায় বেশ নামডাক ছিল তাঁর। প্রথমশ্রেণির পত্রপত্রিকায় সেই কবির কবিতা ছাড়া চলত না। এমনই ছিল তাঁর নাম। সেই কবির ছেলের বিয়ের জন্য দেখতে গেলেন মেয়ে। মেয়ে পছন্দ। দিনক্ষণ ঠিক হল বিয়ের। দেখা গেল বিয়ের দিন বরবেশে পুত্র নয়, পিতা চলেছেন মেয়ের বাড়ি। ছাদনাতলায় শুভদৃষ্টি হল শ্বশুরের সঙ্গে। না ভুল হল, শ্বশুরই তো বর! পরদিন বউ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন সেই প্রথিতযশা সেই কবি! যাকে হ্যাঁ গো ও গো বলতে হত, তাকে ডাকতে হল মা! বুঝছেন সেই পুত্রের কী অবস্থা!
এই তো কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ডে বরের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে এক যুবতী তাঁকে তুলে নিয়ে গেলেন ছাদনাতলা থেকে। সকলের চোখ কপালে! এ কী ডাকাবুকো মেয়ে রে বাবা! পরে জানা মেয়েটি আসলে ছেলেটির প্রেমিকা। ছেলেটি বাবার ভয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন। মেয়েটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিয়ে করব প্রেমিককেই করব, অন্যজনকে কেন! তাই বন্দুকওয়ালি তাঁকে সাজতেই হয়েছিল।
তবে দু’দিন আগে তামিলনাড়ুর ভেল্লোর জেলার ইলায়মপত্তি মুরুগান মন্দিরে যে-কাণ্ড ঘটল তা শুনলে মনে হবে যেন সিনেমার শুটিং হচ্ছিল! পুরো ঘটনা জানতে হলে কিছুটা পিছোতে হবে।
বাড়ির ছেলের বিয়ের কথা চলছে। মেয়ে দেখাও চলছে। একটি মেয়েকে দেখে বাড়ির পছন্দ হয়েছে সকলের। একদিন ঠিক হল মেয়ে দেখতে যাওয়া হবে। কথামতো বাড়ির সবাই চলল মেয়ের বাড়ি।
সকলেরই পছন্দ হল মেয়েকে। মেয়েরও পছন্দ ছেলেকে। বিয়ের দিনও ঠিক। যে-দিন বিয়ে সেদিন বর চলল মেয়ের বাড়ির দিকে। সঙ্গে ছেলের বাড়ির সবাই। বিয়ের পিঁড়িতে বসল ছেলে। মেয়ে আগেই বসেছে।
পুরোহিত ছেলেটিকে বললেন, এবার থালি অর্থাৎ পবিত্র সুতোটি পরিয়ে দাও মেয়ের গলায়। বিয়ের পিঁড়িতে বসা ছেলেটি যেই-না থালি পরাতে যাবে অমনি সামনে এসে হাজির ছেলের ছোট ভাই। তাঁর পকেটে ছিল আর একটা থালি। সেটি এনেছিল আগেই। ভাই তড়িঘড়ি থালি পরিয়ে দিল মেয়ের গলায়। দাদা বিয়ে করতে এসে বিয়ে হল ভাইয়ের।
এমনটা একদিনেই হয়নি। যে-দিন মেয়ে দেখতে ছেলের বাড়ির সবাই এসেছিল, সেদিন মেয়েটির পছন্দ হয়েছিল দাদাকে নয়, ভাইকে! ভাইয়েরও পছন্দ মেয়েটিকে। তাই ওদের মধ্যে একটা সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল। মেলামেশাও চলত হয়তো আড়ালে আবডালে। একটা ব্লুপ্রিন্টও ছকে ছিল দু’জনা। বিয়ের দিনই হল তার সমাপ্তি! সিনেমায় ঠিক এমনই হয়!