দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
মাণিক্য রাজবংশের ত্রিপুরা এখন মানিকের হাতে। ১৯৯৮ থেকে মানিক সরকারই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। মিতভাষী, মিষ্টভাষী, সাধারণ জীবনযাপনের জন্য বিখ্যাত মানিক। প্রতিবার নির্বাচনের আগে তাঁকে নিয়ে প্রথম যে খবরটি হয় তা হল তাঁর ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে! তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে তাঁর সম্পত্তির হিসেব জমা দেওয়ার পরেই রাজ্য জুড়ে তো বটেই, দেশ জুড়ে শুরু হয়ে যায় চর্চা। ভাবটা এমন যেন দারিদ্র্যই তাঁর ইউএসপি। মানিক সরকার নিজে দারিদ্র্য তাঁকে ‘মহান’ করেছে বলে কোনও শ্লাঘা বোধ করেন কি না তা তিনিই বলতে পারবেন তবে তাঁর ক্ষীণ অতি ক্ষীণ ব্যাঙ্কে জমানো টাকা সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়ে। তবে এবার তাঁর দারিদ্র্যে লেগেছে গোলাপের কাঁটা! বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত রোজভ্যলির জন্ম ত্রিপুরায়। প্রাথমিক বৃদ্ধিও ত্রিপুরায়। ত্রিপুরায় রোজভ্যালির এতটাই প্রভাব ও প্রতিপত্তি যে শোনা যায় কোনও এক সময় সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিবময় দত্ত রাজনৈতিক দল তৈরি করে ত্রিপুরায় নির্বাচনে লড়তে চেয়েছিলেন। তাঁর নাকি বক্তব্য ছিল যে ত্রিপুরায় তাঁদের এত এজেন্ট এবং এত আমানতকারী যে ভোটে তাঁদের জয় নিশ্চিত! এ হেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর দারিদ্র্যের প্রচার যখন রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানো হয় তখন বিস্মিত হওয়ার অবকাশ থাকে বইকি! রোজভ্যলির প্রমোদোদ্যানও উদ্বোধন করেছিলেন মানিক। সংস্থার প্রশংসাও করেছিলেন। যেভাবে মদন মিত্র সারধার প্রশংসা করেছিলেন, একই ভাবে মানিকও রোজভ্যালির। তাঁর ক্যাবিনেট সদস্যকে জেরা করেছে সিবিআই। তবে তিনি এখনও সাদা পাজামা-পাঞ্জাবিতে ধোপদুরস্ত, মানুষের মাঝে, সাধারণ, অতি সাধারণ! প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর রায়বর্মনের পুত্র, একসময় কংগ্রেস, পরে তৃণমূল এবং এখন বিজেপির নেতা সমীর বর্মন বলেন, “মিডিয়া ওঁকে মহিমান্বিত করে রেখেছে। সরকারের মধ্যে দুর্নীতির আখড়া তৈরি হয়েছে। আর উনি (মুখ্যমন্ত্রী) এই সব দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।” সুদীপের কথায় “মানিকবাবুর দারিদ্র্য আর চিটফান্ডের বাড়বাড়ন্ত পরস্পরবিরোধী।”
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan