প্রসেনজিৎ ধর :
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কয়েকদিন আগেই বলেছেন, দল ছেড়ে ভুল করেছেন মুকুল।
সামগ্রিকভাবে তৃণমূলের সকলেই দলনেত্রীর প্রতি আনুগত্য দেখাতে মুকুলের কড়া সমালোচনা করছেন কিংবা সুযোগ পেলেই বোঝাতে চাইছেন যে মমতাকে ছেড়ে গিয়ে মুকুল কোনওভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে দাগ কাটতে পারবেন না। অন্তত প্রকাশ্যে এমনটাই বলছেন বড় -মেজ অনেক নেতাই। যদিও মুকুল মহলের বক্তব্য, যাঁরা এমন বলছেন তাঁদের প্রায় সকলেই তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন মুকুলের সঙ্গেই।
রবিবার, শ্রীরামপুরে, অন্যান্য নেতাদের পথে হাঁটলেন না সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি একাধারে মুকুল রায়ের রাজনীতির দ্বিতীয় ইনিংসকে স্বীকৃতি দিলেন আবার ঘুরপথে দলনেত্রীকে অসম্মানও করলেন।
কি বললেন তিনি?
একজন ফুটবলারের মৃত্যু ঘিরে কয়েকদিন ধরেই শ্রীরামপুরে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। এদিন, সেই সদ্য প্রয়াত ফুটবলারের বাড়িতে যান কল্যাণ। কয়েকদিন আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানও এই হতভাগ্য পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। মান্নান সেদিন এই মৃত্যুর জন্য রাজ্যের শাসক দলকেই দায়ি করেছিলেন। মান্নানের এই অভিযোগের কথা এদিন এক সাংবাদিককের কাছে শুনেই চটে যান কল্যাণ। অভিযোগের সরাসরি কোনও উত্তর না দিয়ে তিনি মান্নানকে পাল্টা আক্রমণ করেন। আক্রমণ করতে গিয়ে সাংসদ বলেন, ‘বিরোধী দলনেতার গরু চরানোর পরিসর নেই। তিনি কখনও কারও জন্যে কিছু করেননি।’ এত অবধি এক প্রকার ছিল। এরপরেই তিনি আর একটু বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে বলেন, “বিরোধী দলনেতার কোনও কাজ নেই, তাই উল্টোপাল্টা বকছেন। তিনি কারও জন্য কিছু করেছেন কোনওদিন? কাঠিবাজি ছাড়া কিছু করেছেন?”
মুখ্যমন্ত্রী এই সময় জাতীয় স্তরে তো বটেই, রাজ্য স্তরেও কংগ্রেসের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখছেন। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার ঘরে গিয়ে হালকা মেজাজে সময়ও কাটাচ্ছেন। সেই সময় মান্নানের প্রতি কল্যাণের বিষোদগারের মধ্যে বেশ কিছুটা বাড়াবাড়ি খুঁজে পাচ্ছেন তাঁরই দলের অনেকে। তাছাড়া তৃণমূলে এটা বেশ বেমানান। দলনেত্রী যখন যাঁর প্রতি যেমন মনোভাব পোষণ করেন তা বুঝে নিয়ে দলের বাকিরাও সেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে তেমন ব্যবহারই করে থাকেন। এটাই দলের দস্তুর। মান্নানকে অসম্মান করে কল্যাণ শুধুমাত্র বিরোধী দলনেতার সাংবিধানিক পদটিকেই অপমান করেননি, ঘুরপথে মমতাকেও অসম্মান করেছেন বলে মনে করছেন তাঁর দলেরই কেউ কেউ।
এরপরেই মুকুল প্রসঙ্গ টেনে এনে তাঁর বক্তব্যের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেন কল্যাণ। বলেন, “বিরোধী দলনেতা দল ছেড়ে মুকুলের দলে যোগ দেবেন।”
মুকুলের কোনও প্রসঙ্গ ছিল না, তবু আগ বাড়িয়ে কেন মুকুলের নাম মুখে আনলেন কল্যাণ? এখনও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না, মুকুল বিজেপিতে যাবেন না নিজের নতুন দলে! সেই সময় কল্যাণ কী করে বললেন মান্নান মুকুলের দলে যাবেন? তাহলে কী তিনিও যোগাযোগ রাখছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে? তাছাড়া তাঁর দল যখন মুকুলকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না বা গুরুত্ব দিলেও তা গোপণ করতে চাইছে তখন কল্যাণ কেন একথা বললেন? এইসব প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে তৃণমূলে।
আবদুল মান্নান অবশ্য কল্যাণের কথার উত্তর দিতে চাননি।
(দেখুন ভিডিয়ো)
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan
আরও পড়ুন :-