দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
মুকুল রায় তাঁর নয়াদিল্লির সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, দলে কেউ কারও চাকরবাকর হতে পারে না, সকলেরই বন্ধু হওয়া উচিত। তাঁর এই বক্তব্যের বিবিধ ব্যখ্যা বিভিন্ন মহল ও ব্যক্তি ইতিমধ্যেই করেছেন। মুকুল সেদিন দলের মধ্যে যে বৃহৎ, এক সময় দলের জন্য নিজের জীবন নষ্ট করা, সৎ এবং অধুনা উপেক্ষিত ও সতত অপমানিত অংশটি রয়েছে, সেই অংশটিকেই ছুঁতে চেয়েছিলেন।
মুকুল যেদিন দেশের রাজধানীতে এই সাংবাদিক বৈঠক করছেন, তার কয়েকদিন আগেই উত্তর কলকাতায় এরকমই একটি ‘অপমানের আসর’ অনুষ্ঠিত হল উত্তর কলকাতার আহিরিটোলায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্মতলার অনশন মঞ্চ, যে অনশনের উদাহরণ দল তো বটেই এমনকি নেত্রীও বিভিন্ন বক্তৃতায় টেনে আনেন, সেই অনশনে তাঁর সঙ্গে যে কয়েকজন শেষ দিন পর্যন্ত অনশন করেছিলেন তার মধ্যে বিজয় উপাধ্যায় অন্যতম। অনশনের গরিমা কারও সঙ্গে ভাগ করে নিলে ম্লান হয়ে যেতে পারে। সম্ভবত এমন কিছু ভেবে পাঠ্য পুস্তকে, যেখানে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের কথা লেখা আছে, সেখানে বিজয় বা আভাস মুন্সীদের নাম নেই! সিঙ্গুর আন্দোলনের ‘ইতিহাসে’ বহু নামের ভিড়ে অবশ্য বিজয়ের নাম আছে।
বিজয় উপাধ্যায়, এক সময়ের সমাজবাদী পার্টির রাজ্য সভাপতি, এখন তৃণমূলের পুরপিতা। মহালয়ার দিন আহিরিটোলার পুজো উদ্বোধনের মঞ্চে ‘অপমানিত’ হলেন মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই।
কি হয়েছিল সেদিন?
পুজো উদ্বোধন করতে এসে বিজয়কে দেখে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সামনের সারিতে বসতে বলেন। বলেন, তুমি সামনে বোসো, তুমি সিনিয়র। বিজয়ও তাই করেন। মঞ্চে উপস্থিত সুত্রের খবর, এরপরেই বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় এসে বিজয়কে চেয়ার ছেড়ে উঠে যেতে বলেন। নয়নার স্বামী সাংসদ তথা উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের সভাপতি। নয়না কার্যকরী সভাপতি। বিজয়রা যে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইকে সমর্থন জানাতে এগিয়ে এসেছিলেন, সেই সময় নয়না খবরের শিরোনামে এসেছিলেন মমতার তীব্র সমালোচনা করে। তাঁর সেই সমালোচনা সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনেও ব্যবহার করেছে বিরোধীরা। এ হেন নয়না বিজয়কে উঠিয়ে দিয়ে বলেন, আপনি পিছনে যান। ওখানে আপনাদের, মানে কাউন্সিলরদের চেয়ার আছে।
অনেকে বলছেন, যে পথ দিয়ে তৃণমূল এতদুর এল সেই পথ ভুলে যাওয়ার উৎসব চলছে দলে।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan