দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
“কালাদিবস কেন? এদিন আমাদের উল্লাস দিবস!”
বক্তা শচীন্দ্রনাথ সিংহ।
চিনতে পারলেন না তো!
শচীন্দ্রনাথ হলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ক্ষেত্রীয় সম্পাদক।
ডিসেম্বরের ৬ তারিখ, প্রতি বছরের মত এই বছরেও রাস্তায় নামবে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও বাম।
অযোধ্যায় বিতর্কিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে রামমন্দির ‘পুনঃস্থাপনের’ চেষ্টার প্রতিবাদে এদিন কালা দিবস বা সম্প্রীতি দিবস পালন করে তারা।
এই বছর পরিস্থিতি কিছুটা হলেও ভিন্ন। এই রাজ্যেও খুব অল্প হলেও ভিন্ন স্বর শোনা যাচ্ছে। এই সময়ের একজন উল্লেখযোগ্য কবি অকপটে প্রশ্ন তুলছেন, মহাকাব্যের নায়ক শ্রীরামচন্দ্রের জয়ধ্বনি দিতে বাধা কোথায়? সপাটে জিজ্ঞাসা করছেন, শাহরুখ যদি কথা বলতে বলতে ইনসাআল্লা বললে সাম্প্রদায়িকতা না হয় তাহলে অক্ষয় কুমার যদি কখনও জয় শ্রী রাম বলেন তাহলে লোকে কেন রে রে করে উঠবে! আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল এই যে এই ধরণের লেখা রাজ্যের জনপ্রিয় দুটি সংবাদপত্রেে উপর্যুপরি ছাপাও হচ্ছে ফলাও করে। বিনায়ক চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছেন অত্যাচারিত, নিপীড়িত মানুষ আগে বিপন্ন তারপর সে হিন্দু না মুসলিম তা বিচার্য। একটি জনপ্রিয় হিন্দি ছবিতে দেখান হচ্ছে, পাকিস্তানের কোনও এক মসজিদের মৌলবী অবলীলায় বলছেন জয় শ্রী রাম। আর তা শুনে অবাক হয়ে যাচ্ছেন ভারতের এক হনুমানভক্ত যুবা! আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই যে মৌলবীর এমন কাণ্ড পর্দায় দেখে এদেশের ইমামরা প্রতিবাদ করছেন না। সিনেমায় এইটুকু বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না যে রামের জয়ধ্বনি দিয়ে মৌলবী আল্লাকেই স্মরণ করছেন। আবার দরগায় মাথা ঠুকে বজরঙ্গি ভাইজান তাঁর আরাধ্যকেই প্রণাম করছেন। আহ্লাদের কথা এই যে এই ছবিটি জাতীয় পুরস্কারও পেল। পেল, কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আমলেই।
অনেকে বলতে শুরু করেছেন, সময় পাল্টাচ্ছে। অনেকে অনুভব করতে শুরু করেছেন, এই দেশে সিউডো যুগের অবসান আসন্ন। উল্টে হিন্দু আবেগের পাশে মুসলিমরা দাঁড়াবেন আর মুসলিম আবেগের পাশে হিন্দুরা। এই মতামতের মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যেই।
আর কোনও রাখঢাক না করেই শচীন্দ্রনাথের মত হিন্দু নেতা বলছেন,”ওরা কাল বাবরি ধ্বংসের জন্য কাঁদবে। ওদের চোখের জলে কাল কলকাতার কিছু রাস্তা হয়ত পরিস্কার হবে! তার বেশি কিছু নয়। তবে রাজ্য বিশ্বহিন্দু পরিষদ এই দিনটিকে নিজেদের উল্লাস দিবস রূপেই দেখবে। ওরা যখন রাস্তাতে কাঁদবে , ঠিক সেই সময় আমরা আমাদের স্বর্গীয় নেতাদের স্মরণ করব। তার পাশাপাশি সারা দেশের সাধুসন্তরা রামমন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য সংকল্প নেবেন। অযোধ্যাতে রাম মন্দির তৈরি না হলে আমাদের স্বর্গীয় সাধুসন্তদের আত্মার শান্তি হবে না।”
সংখ্যালঘুদের জন্য এইসব রাজনৈতিক দলগুলির অশ্রুকে কুম্ভীরাশ্রু বলেই প্রতিপন্ন করতে চাইছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। শচীন্দ্রনাথের কথায় তাঁর সংগঠনের এই মনোভাবই ফুটে উঠেছে।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan