সুমন সেনগুপ্ত :
প্রথম যখন জীবনানন্দের কবিতা পড়ি তখন এক আবছা ধারণার অভিঘাত মস্তিষ্কে অনুভব করেছিলাম। নিশ্চিতভাবে অনুভব করেছিলাম এক প্রবল অস্বস্তি। আজও যা বহন করে চলেছি। যা প্রবল সত্য আজও আমরা জীবনানন্দকে পুরোপুরি অনুধাবন করতে পারিনি। জীবনানন্দ অসংখ্য চেতনার আধার। শুধু বিরহ আর ব্যর্থতার আভাষ নয়। জীবনানন্দ আসলে রোমান্টিকতায় নিমজ্জিত এক প্রেমিক পুরুষ। জীবনানন্দ লিখেছেন–গভীর নীলাভতম ইচ্ছা চেষ্টা মানুষের –ইন্দ্রধনু ধরিবার ক্লান্ত আয়োজন/ হেমন্তের কুয়াশায় ফুরাতেছে অল্পপ্রাণ দিনের মতো। তুমিকে ঘিরে প্রেমঘন এ রকম রোমাণ্টিক চেতনার বিচ্ছুরণ আর কোন কবির কবিতায় ঘটে নি। জীবনানন্দ লিখছেন–আমি যদি হতাম বনহংস/বনহংসী হতে যদি তুমি। জীবনানন্দের সুরঞ্জনা আজও আমাদের স্বপ্ন আকাঙ্খার প্রতীক। সুরঞ্জনার মতো প্রেমিককে আমরা খুঁজে চলেছি জীবনভর। এই সন্ধান সারা জীবন জীবনানন্দও চালিয়েছেন। সুরঞ্জনা আজও তুমি আমাদের পৃথিবীতে আছ এক খন্ডিত সত্ত্বা নিয়ে। জীবনানন্দ উপলব্ধি করেছিলেন– বিলুপ্ত ধূসর কোন পৃথিবীর শেফালিকা বোসকে। তাই তিনি লিখলেন,তোমার মুখে দিকে তাকালে এখনও/আমি সেই পৃথিবীর নীল/দুপুরের শূন্য সব বন্দরের ব্যথা/বিকেলের উপকণ্ঠে সাগরের চিল/নক্ষত্র রাত্রির জল যুবাদের ক্রন্দন সব/শ্যামলী করেছি অনুভব।
প্রেমের এই সর্বব্যাপী বিস্তারকে অনুভব করার জন্য আমাদের যেতে হবে বনলতা সেনের কাছে। সুরঞ্জনা-শেফালিকা-অরুণিমারা বারবার ফিরে ফিরে আসে গোধূলির ধূসরতায়। নানা অনুসঙ্গে নানা ব্যঞ্জনায় এরা আমাদের মনের গভীরে ঠাই করে নেয়। জীবনানন্দের ভাষায়–হাজার বছর শুধু খেলা করে অন্ধকারে জোনাকির মতো। শেষ আশ্রয় বনলতা সেন। অপ্রতিরোধ্য সেই মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে মনে হয়–ঘুচে গেছে জীবনের সব লেনদেন।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan