মধুমন্তী :
২৯ মে, তেনজিং নোরগের জন্মদিন। তেনজিং-এর জন্মদিন ঠিকভাবে জানা যায়না। কিন্তু তিনি যে-দিন এভারেস্টে পা দিয়েছিলেন সেদিনই জন্মদিন বলে নিজে মনে করতেন। তাই ২৯ মে-ই জন্মদিন পালন করা হয় তাঁর। ১৯৫৩-র ২৯ মে তিনিই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যিনি এভারেস্ট জয় করেন।
তাঁর জন্মদিনের ঠিক আগের দিনই ফিরল দুই পর্বতারোহীর মৃত দেহ। নাম— গৌতম ঘোষ এবং পরেশ নাথ। দু’জনেই গত বছর মে মাসে এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে তুষার ঝড়ের কবলে পড়েন বলে জানা যায়। যে-ঘটনার পর প্রায় এক বছর কেটে গেলেও পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁদের খোঁজ। অবশেষে ২৮ মে খোঁজ পাওয়া গেল ওঁদের দেহের।
এ বছর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গৌতম ঘোষের পরিবার দেহ উদ্ধারের কাজ শুরুর উদ্যোগ করেন। রাজ্যের যুবকল্যাণ দফতরে প্রধান সচিব সৈয়দ আহমেদ বাবা এবং দফতরের পর্বতরোহণ শাখার প্রাক্তন উপদেষ্টা পর্বতারোহী উজ্জ্বল রায় উদ্ধারকাজের জন্য এভারেস্টে পৌঁছন। তারপর ক্যাম্প টু থেকে কাঠমান্ডু উড়িয়ে আনা হয় তাঁদের দেহ। দেহ বরফে জমে থাকায় ময়না তদন্তের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি গতকাল। সমস্ত আইনি পদক্ষেপ মিটলে ১ জুন কলকাতা ফেরানো হবে এই দুই পর্বতারোহীর দেহ।
এ প্রসঙ্গে সদ্য ধৌলাগিরি জয় করা আরেক এভারেস্ট জয়ী দীপঙ্কর ঘোষ জানান, “এভারেস্ট জয় সকলের কাছে স্বপ্নের মতো। অনেকেই মনে করেন খুব সহজেই এভারেস্ট জয় করা সম্ভব, কিন্তু একেবারেই সেটা নয়। পথ বড়ই দুর্গম।”
অন্যদিকে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবের কারণেই মৃত্যু হয়েছে গৌতম ঘোষ ও পরেশ নাথের বলেও মনে করেন তিনি।
এই দুর্গম পথ অতিক্রম করতে গিয়ে প্রতিবছরই বরফের তলায় চাপা পড়ে যান বহু গৌতম-পরেশরা। এভারেস্টে মারা গেছিলেন জর্জ ম্যালোরি-র মতো পর্বতারোহীও। অনেকেই হয়তো তেনজিং-এর মতো এভারেস্ট শৃঙ্গে পা রাখতে পারেননি কিন্তু পাহাড়ের প্রতিটা ঢালে তাঁদের শ্বেত শুভ্র স্বপ্নগুলো আটকে রয়েছে জমা বরফের মতো! তবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে ২৭ জন পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বপ্ন সার্থক হয়েছে।
