চ্যানেল হিন্দুস্থান ডেস্ক:
এবার পঞ্চায়েত ভোটে ১০ শতাংশেরও কম আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়েছে। জেলা পরিষদের মাত্র ৮টি আসনে লড়াই হচ্ছে না। পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রায় ১০ হাজার আসনের মধ্যে মাত্র ৭৫৯টিতে লড়াই হচ্ছে না। গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ৬৩ হাজার ২২৯টি আসন। এর মধ্যে লড়াই নেই মাত্র ৬,২৩৮টিতে।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরে বুধবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হওয়া আসনের হিসেব মিলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের ইতিহাসে কখনও এত কম সংখ্যক আসনের ক্ষেত্রে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়-পরাজয়ের হিসাব হয়নি। এবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া শুরুর অনেক আগে থেকেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সব আসনে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন বিরোধীদের।
ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে মোট আসনের সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার। তৃণমূলের দাবি, এত সংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো সংগঠন বিরোধী কোনও দলেরই নেই। বিরোধীরা কার্যত একত্র হয়ে এবার প্রায় ৯০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে।রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় সবচেয়ে বেশি হয়েছে বীরভূমে।
এখানে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৯৩টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়েছে। বীরভূমের পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হওয়া আসনের সংখ্যা ৮৬৭। পূর্ব বর্ধমানে ৮৫৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে লড়াই হয়নি। সবচেয়ে কম সংখ্যক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হওয়া আসন আলিপুরদুয়ারে। এখানে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাত্র ৮টি আসনে লড়াই হচ্ছে না।
দক্ষিণ দিনাজপুরে ১১, দার্জিলিংয়ে ৪০, জলপাইগুড়িতে ২৯, ঝাড়গ্রামে ৩০, কালিম্পংয়ে ১০, মালদহে ৪৮, নদিয়ায় ৬৩, পূর্ব মেদিনীপুরে ৬২ এবং পুরুলিয়ায় ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়েছে। বাঁকুড়ায় ৬৬৪, কোচবিহারে ১৫৭, হুগলিতে ৩৯৮, হাওড়ায় ৭১৭, মুর্শিদাবাদে ১৬৬, পশ্চিম বর্ধমানে ২৭২ ও উত্তর দিনাজপুরে ৩০৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে ভোট হচ্ছে না।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে রাজনৈতিক দল।গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যেসব আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়েছে তার প্রায় ১০০ শতাংশই জিতেছে তৃণমূল। কয়েকটি আসনের ক্ষেত্রে সিপিএম, বিজেপি বা কংগ্রেস জয় পেয়েছে। দু-একটি ক্ষেত্রে নির্দল ও অন্যান্যরাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসনে হয়েছে বীরভূমে। এখানে ১২৮টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়েছে।
বাঁকুড়ায় ১০৬, কোচবিহারে ১৭, দার্জিলিংয়ে ৯, হুগলিতে ৫৮, হাওড়ায় ৯৮, ঝাড়গ্রামে ৫, কালিম্পংয়ে ১, মালদহে ৪, মুর্শিদাবাদে ১২, নদিয়ায় ৫, উত্তর ২৪ পরগনায় ১০৪, পশ্চিম বর্ধমানে ১৮, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬৭, পূর্ব বর্ধমানে ৯৩, পূর্ব মেদিনীপুরে ২, পুরুলিয়ায় ১ এবং উত্তর দিনাজপুরে ৩১টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফয়সালা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ির পঞ্চায়েত সমিতির সব আসনেই লড়াই হচ্ছে।
জেলা পরিষদে বীরভূমে ১টি আসন, কোচবিহারে ১টি আসন, উত্তর ২৪ পরগনায় ৩টি আসন ও উত্তর দিনাজপুরে ৩টি আসনে লড়াই নেই। বাকি সব আসনে লড়াই হচ্ছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন-সূত্রে পাওয়া তথ্যে একমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার চিত্রটি মেলেনি।