প্রসেনজিৎ ধর :
এক দশক-দু’দশক আগেও ছবিটা ছিল একই রকম। একই চিত্রনাট্য, একই সংলাপ। বদলেছে শুধু কুশীলব।
সেই সময় সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠত তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙ্গাার। মারধর করার। মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সিপিএমের নেতারা তখন বলতেন, ওই সব ঘটনায় তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। যা ঘটেছে তা নেহাতই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
তৃণমূলের সাড়ে ছ’বছরের শাসন কালে এই ছবির বদল হয়নি বদলে গেছে শুধু চরিত্রগুলো। এখন সে দিনের সিপিএমের জায়গা নিয়েছে তৃণমূল আর সেই ‘মার খাওয়া’ তৃণমূলের জায়গা নিয়েছে বিজেপি। এখন বিজেপি করছে মার খাওয়ার অভিযোগ আর তৃণমূলের নেতাদের মুখে উঠে এসেছে সিপিএমের পুরনো সংলাপ, বিরোধীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! বাকি বিরোধী দল আক্রান্ত হচ্ছে না তা নয়। তবে ভোট শতাংশের নিরিখে এখনও সিপিএমের থেকে পিছিয়ে থাকলেও কার্যকরী ভাবে বিরোধী রাজনীতির আঙ্গিনায় এখন নিজেদের নিয়মিত প্রাসঙ্গিক করে রাখছে বিজেপি।
যেমন চুঁচুড়ার পেয়ারা বাগানে দলীয় পার্টি অফিসে ভাঙ্গচুর ও আগুন লাগানোর অভিযোগ তুলল হুগলী জেলা বিজেপি। তাদের অভিযোগ, ‘৯ তারিখে মুকুল রায়ের সভা ছিল। সেই সভা শেষ হওয়ার পর থেকে তৃণমূলের লোকজন আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল। এবার তা করে দেখাল।’ স্থানীয় বিজেপির বক্তব্য, “রাত ন’টার সময় চুঁচুড়া মণ্ডলের পার্টি অফিসে দু’জন কর্মী বসে ছিল। তখন হঠাৎই এসে তৃণমূলের ছেলেরা ভাঙ্গচুর করতে থাকে। বলতে থাকে মুকুল রায় তোদের বাঁচাবে? ডাক তোদের বাপ মুকুলকে! মুকুলদার নামে অজস্র নোংরা গালাগাল দিতে থাকে।তারপর পার্টি অফিসের জিনিসপত্র ও দুটি সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
বাম আমলের সিপিএমে-সংলাপ এখন জায়গা করেছে তৃণমূল নেতার মুখে। অনিল বসুদের স্মৃতি উসকে দিয়ে এদিন তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “শুনলাম পার্টি অফিস ভাঙ্গচুর হয়েছে।কিন্তু এটা বিজেপিরই নিজেদের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফল। এটার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও কর্মী জড়িত নয়।”
এক দিকে তোলাবাজি, দাদাগিরি, সিন্ডিকেটরাজ, দুর্নীতি আর একদিকে রবীন্দ্র-নজরুল-বিবেকানন্দ উদযাপনে বিহ্বল সাধারণ মানুষ হয়ত ভাবছেন, রাজা আসে, রাজা যায়, দিন বদলায় না।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan