Breaking News
Home / TRENDING / হিন্দু না ওরা মুসলিম? বিজেপি বলছে, ওই জিজ্ঞাসে কোন জন!

হিন্দু না ওরা মুসলিম? বিজেপি বলছে, ওই জিজ্ঞাসে কোন জন!

দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :

কাজী নজরুল ইসলামের একটি বহু পঠিত কবিতা এই ফাগুন শুরুর বিকেলে মনে পড়াল কলামন্দির! ঠিক কলামন্দির নয় তার পেটের ভেতর লুকনো কলাকুঞ্জ।
কবি সম্মেলন বা নজরুল সন্ধ্যা নয়, একটি পা থেকে মাথা পর্যন্ত রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নজরুল এলেন। এল তাঁরই কবিতার পংক্তি, তবে একেবারে অন্যভাবে।
প্রশ্ন হল, কোন কবিতা?
প্রশ্ন হল, কোন পংক্তি?
কবিতা, কাণ্ডারী হুঁশিয়ার।
পংক্তি, “হিন্দু না ওরা মুসলিম ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?/ কাণ্ডারী বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র !”
না, এই কবিতা কেউ আবৃত্তি করেন নি। এই পংক্তি উচ্চারণও করেন নি। তবু এসেছে।
বিজেপির অনুষ্ঠান। দলের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য শাখার অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেই নজরুলের এই কবিতাংশের কয়েকটি শব্দই ঘুরে ফিরে আলোচনায় এল। হিন্দু, মুসলিম, মানুষ, সন্তান ও মা। সাধারণত তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ মহলে এই কবিতাংশের কদর বেশি। তবে এক্ষেত্রে বিজেপির সভাতেই এই শব্দগুলি উজাগর হয়ে রইল।
“হিন্দু না ওরা মুসলিম?”
এই প্রশ্নটি বিজেপি কখনও করে না। বরং জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বিজেপি মানুষকে মানুষ বলেই দেখতে চায়। সভায় এই কথাটিই বোঝাবার চেষ্টা করেছেন বক্তারা। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেছেন, মোদিজি যে প্রকল্পগুলি এনেছেন তা দেশের গরীব মানুষের কথা ভেবে। তথ্য বলছে, দেশে ৮ কোটি মুসলিম দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে। প্রকল্পে উপকৃত হবেন তাঁরাই। প্রত্যেক গ্রামে যখন বিদ্যুৎ পৌঁছবে তখন এটি হিন্দুদের বাল্ব কিংবা এটি মুসলিমের বাল্ব, এভাবে জ্বলবে না। মোদিজি যদি প্রকল্পের এমন নামকরণ করতেন যাতে বোঝা যেত এটি মুসলিমদের জন্য প্রকল্প, তাহলে হয়ত তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ বলা যেত! মুসলিমদের মুসলিম করে না দেখতে পারলে, না দেখাতে পারলে এদেশে বুঝি ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া যায় না! মুসলিমদের মানুষ হিসেবে ভাবার উপায় নেই! মুসলিমদের নাগরিক হিসেবে ভাবার উপায় নেই!
অধ্যাপিকা সৈয়দ তনভীর নাসরিন বুঝিয়েছেন, সুদীপ্ত সেনের থেকে এক কোটি টাকা নেওয়া নলিনী চিদম্বরমের স্বামীর পক্ষে কেন বোঝা সম্ভব নয় গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে, মোদিজির প্রকল্প কেন অমূল্য! ৫০০০০, ১০০০০০ টাকা একটি গরীব মানুষের ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্যে কতটা প্রয়োজনীয় হতে পারে তা বুঝিয়েছেন তনভীর। একই সঙ্গে তথ্য তুলে ধ’রে দেখিয়েছেন দেশের গরীব মানুষের সিংহভাগ মুসলিম।
দিলীপ ঘোষ বলেছেন, মমতা ২ টাকা কিলো চাল দেওয়ার কথা গর্বের সঙ্গে বলেন, এটা আসলে গর্বের নয় লজ্জার। গুজরাতে মুসলিমরা চার চাকা চাপছে আর এখানে সাইকেল পাবার জন্যে লাইন দিচ্ছে।
এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা মুকুল রায়। মুকুল মমতার নাম না করে বলেছেন, এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার কৃতিত্ব কারও একার নয়। এটা এখানকার সংস্কৃতি। শ্রীরামকৃষ্ণ, রাণী রাসমণি, কাজী নজরুলের মাটিতে সম্প্রীতি শেখার জন্য কোনও ব্যক্তি বিশেষকে কৃতিত্ব দেওয়ার দরকার নেই।

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *