মধুমন্তী :
বাংলা ছবি তো বটেই ভারতীয় চলচ্চিত্রে বিমল রায় একটা যুগ। ১৯৪৪-এ তিনি করেছিলেন একটি বাংলা ছবি। নাম-উদয়ের পথে। প্রথম বাংলা ছবি যা শ্রেণি সংগ্রামের কথা বলেছিল। দেখিয়েছিল একজন ধনী মহিলার ডিক্লাসড হয়ে যাওয়ার ছবি। এটাই ছিল প্রথম রাজনৈতিক ছবি। বিমল রায়ের নাম ছড়িয়ে পড়ল টলিউড থেকে বলিউডে।
বিমল রায়ের কেরিয়ার শুরু নিউ থিয়েটার্সের ক্যামেরা অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে। তিনি নিউ থিয়েটার্সের ছবি ‘দেবদাস’-এ পরিচালক প্রমথেশচন্দ্র বড়ুয়ার সহ পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন।
বিমল রায় জন্মেছিলেন ১৯০৯ এর ১২ জুলাই। তিনি ছিলেন ঢাকার সুয়াপুরের এক জমিদার পরিবারে সন্তান। ঢাকা থেকে তিনি চলে এসেছিলেন কলকাতা। এই শহরে এসে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন রুপোলি জগতে।
কলকাতা ছেড়ে তিনি চললেন আরব সাগরের তীরে। তাঁর আমন্ত্রণ ছিল বোম্বে টকিজে। বোম্বে টকিজ ছিল যে কোনও অভিনেতা অভিনেত্রীদের কাছে স্বপ্নের জায়গা। বিমল রায় একা গেলেন না সেখানে। নিয়ে গেলেন সাহিত্যিক নবেন্দু ঘোষ, অসিত সেন, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়কে। নিয়ে গেছিলেন আর এক জনপ্রিয় সাহিত্যিক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। বিমল রায়ের জয় যাত্রা শুরু হল মুম্বইয়ে। ‘পরিণীতা’, ‘দো বিঘা জমি’, ‘বিরাজ বহু’, ‘দেবদাস’, ‘ইহুদি’, ‘মধুমতী’, ‘সুজাতা’-র মতো ছবি করেছিলেন তিনি। বলা যায়, হিন্দি ছবিকে জাতে তুলেছিলেন বিমল রায়।
একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন বিমলবাবু। যার মধ্যে জাতীয় পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড এমনকী কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও পুরস্কৃত হন তিনি। বিমল রায়ের পরিচালিত ছবি ‘মধুমতী’ নয়টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পায়। বিমল রায়ের ছবি ‘বিরাজ বহু’ এবং ‘সুজাতা’ মনোনীত হয়েছিল পাম দ’অর-এর জন্য। ‘দো বিঘা জমিন’ও মনোনয়ন পেয়েছিল গ্র্যান্ড প্রাইজ ফেস্টিভ্যালে।
বরেণ্য এই পরিচালক মারা যান দুরারোগ্য ক্যানসারে ১৯৬৬-র ৮ জানুয়ারি। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন