চ্যানেল হিন্দুস্থান, নিউজ ডেস্ক-
সাহিত্য জগতে তার অবদান অনস্বীকার্য। এহেন কৃতীকে সম্মান জানাতেই, বছরের ‘সেরা সাহিত্যিক’ হিসেবে তাকে নির্বাচিত হয়েছিলেন, কিন্তু প্রথমে তিনি জানতেন না, সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আদানি গোষ্ঠী। আর তা জানামাত্রই সরাসরি সাহিত্য সম্মান প্রত্যাখান করলেন দক্ষিণের বিখ্যাত মহিলা দলিত কবি সুকিরথারানি।
দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্য জগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তামিলনাড়ুর জনপ্রিয় সাহিত্যিক সুকিরথারানি (Poet Sukirtharani)। দলিতদের সাম্যের লড়াই তাঁরও এই লড়াই, আর সেখানে হাতিয়ার কলম। তিনি মনে করেন, অন্যান্য মহিলা কবিদের পক্ষে সমাজে প্রতিষ্ঠা পাওয়া যতটা কঠিন, একজন দলিত মহিলার ক্ষেত্রে সেই লড়াই যে কয়েকগুণ বেশি, তার অবকাশ নেই।
স্বাধীনতার এত বছর পরেও বিভিন্ন প্রান্তে অত্যাচারের শিকার হতে হয় দলিত মানুষদের। বিশেষত, দলিত মহিলাদের এই সমাজে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাটাই যথেষ্ট কঠিন। দীর্ঘকাল ধরে এই বিষয় নিয়েই লিখেছেন সুকিরথারানি। তার কলমে উঠে এসেছে প্রতিবাদের গল্প, কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি। শুধুমাত্র নিজের লড়াই নয়, সামগ্রিক ভাবে দলিত সমাজের বাস্তব চিত্রটাই লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে দেশের যারা ক্ষতি চান, তাদের বিরুদ্ধেও সর্বদা গর্জে ওঠে তার কলম।
সম্প্রতি, আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কে দেশ জুড়ে চলতে থাকা বিতর্কের খবর, ইতিমধ্যেই তার জানা। যা জানার পর তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, আদানি গোষ্ঠীর কারণেই বহু সাধারণ মানুষ ঝুঁকির সম্মুখীন হতে চলেছে। তাই সেই আদানি গোষ্ঠীকেই বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের দেওয়া কোনও সম্মান তার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।
যদিও এই সম্মান অনুষ্ঠানের আয়োজক আদানি গোষ্ঠী নয়। এক সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের পক্ষ থেকেই প্রতি বছর আয়োজন করা হয় সম্মান অনুষ্ঠান। এবছর তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১২জন সফল নারীকে এই সম্মান দিতে চেয়েছিলেন আর যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সুকিরথারানি। প্রথমে সম্মান প্রাপ্তির কথা জানলেও, অনুষ্ঠানের প্রধান আর্থিক পৃষ্ঠপোষক কারা, সেকথা জানতেন না তিনি। তবে যখনই জানতে পারেন সেই গোষ্ঠী আর কেউ নয়, বরং বিতর্কে শীর্ষে থাকা আদানি গোষ্ঠী, তখনই সম্মান প্রত্যাখানের কথা ঘোষণা করেন তিনি।