নিজস্ব প্রতিবেদন:
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো বড় নেতাই রামলালা দর্শন করতে যাননি। বিতর্কিত এই স্থান থেকে দূরেই রয়েছেন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা। গত ২৭ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুলায়ম সিংহ যাদব, মায়াবতী, রাহুল গাঁধী, প্রিয়াঙ্কা গাঁধী ও অখিলেশ যাদবের মতো নেতারা রামলালা দর্শন হোক বা ভোটের প্রচারে কখনও ওই এলাকায় যাননি। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গত আড়াই বছরে ১৮ বার অযোধ্যা গিয়েছেন। যোগীই বিজেপির দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী যিনি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর রামলালা দর্শনে গিয়েছেন।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে শেষ বার অযোধ্যায় গিয়েছিলেন মোদী। সেখানে তিনি জনসভাও করেন। তখন বলা হয়েছিল রামলালা দর্শন করতে মোদী যাবেন। কিন্তু বিতর্কিত ওই স্থান এড়িয়ে গিয়েছেন মোদী। এমনকি ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভার নির্বাচনী প্রচারে অযোধ্যা গিয়েছেন মোদী। নির্বাচনী মঞ্চে রাম মন্দিরের প্রসঙ্গ থাকলেও, রামের জন্মস্থানে পা রাখেননি মোদী।
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের সময় কৃষক যাত্রা করেছিলেন রাহুল গাঁধী। সারা উত্তরপ্রদেশ ঘুরলেও যাননি শুধু অযোধ্যায়। এরপর ২০১৯ লোকসভা ভোটের সময় অযোধ্যায় আসেন রাহুল। ১৯৯২ সালের পর গাঁধী পরিবারের কেউ প্রথমবার অযোধ্যায় আসেন। তবে প্রত্যেকবারই অযোধ্যা এসেও বিতর্কিত রামের জন্মভূমি এড়িয়েই গিয়েছিলেন রাহুল। এই বছর লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের সময় ২৯ মার্চ অযোধ্যায় রোড শো করেন প্রিয়াঙ্কা গাঁধী বঢ়রা। কিন্তু যাননি শুধু বিতর্কিত রাম জন্মভূমিতে। একইভাবে সমাজবাদী পার্টির মুলায়ম সিংহ যাদব, অখিলেশ যাদব বা বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীও এড়িয়ে গিয়েছেন রামলালার মন্দির। তারা বিভিন্ন সময় অযোধ্যা গেলেও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ওই বিতর্কিত স্থানে কদাপি পা রাখেননি।
বাবরি মসজিদ ধ্বংস বা রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনের সময় কৌতূহল বিস্তর। তারপরেও তারা কেন ওই স্থানে যাননি, তা নিয়ে বহু বার প্রশ্ন উঠেছে। শুধু নীরব থেকেছে রাজনৈতিক নেতারা। এই প্রসঙ্গে অযোধ্যার এক প্রবীণ সাংবাদিক বিষ্ণু নিবাস বলেন, এর পিছনে রয়েছে হিন্দু-মুসলিমের ভোট ভাগাভাগির ব্যাপার। তাই মোদী নির্বাচনী প্রচারে এসে সকলকে নিয়ে চলার বার্তা দিতে গিয়ে, রাম জন্মভূমি এড়িয়ে গিয়েছেন। একইভাবে রাহুল বা প্রিয়াঙ্কা এটাকে আদালতের বিষয় বলে চুপ করে থাকলেন। অপরদিকে সপা-বসপা নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডায় রাম মন্দির প্রসঙ্গ রাখলেনই না। তাই ভিতরে ভিতরে ধর্ম কাজ করলেও, রাম নিয়ে বিতর্ক এড়িয়েছেন সবাইই।