Breaking News
Home / TRENDING / অবিস্মরনীয় তুলসী চক্রবর্তী

অবিস্মরনীয় তুলসী চক্রবর্তী

পার্থসারথি পাণ্ডা : 

হাওড়া থেকে তুলসী চক্রবর্তী হামেশাই হেঁটে আসতেন টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ায়। উদ্দেশ্য ছিল পথ চলতি মানুষ আর তাদের জীবন ও ম্যানারিজম কাছ থেকে দেখা। এই দেখাটাই তাঁর অভিব্যক্তিতে অবয়ব পেত সিনেমার পর্দায়, নাটকের মঞ্চে। চ্যাপলিন যেমন ছিলেন একজন কমপ্লিট অভিনেতা, তুলসী চক্রবর্তীও ছিলেন তেমনই একজন। তিনি যেমন ছিলেন সঙ্গীতে পারদর্শী, তবলা-পাখোয়াজে ওস্তাদ, নাচে পটু; তেমনি ছিলেন মঞ্চ ও সিনেমার দুর্ধর্ষ অভিনেতা। ছবিতে ছোট্ট একটি সিনে নির্বাক একটি চরিত্রে থাকলেও দর্শকের নজর গিয়ে পড়ে তাঁরই ওপর। মনে করে দেখুন বিমল রায়ের ‘অঞ্জনগড়’ ছবির কথা। সেখানে তিনি শুধু ড্রাইভারের পাশে নির্বাক বসেছিলেন একটি ট্রাকে। শুধুমাত্র অভিব্যক্তিতেই দর্শকের মন কেড়ে নিয়েছিলেন সেখানে। এমনই ছিল তাঁর আকর্ষণী ক্ষমতা।

সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’-তে তিনি গ্রামের দোকানদার কাম পাঠশালার পণ্ডিত প্রসন্নর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তখনই সত্যজিৎ চিনেছিলেন এই জাত অভিনেতাকে। তাই পরে ‘পরশ পাথর’ ছবিটি করতে গিয়ে পরেশবাবুর চরিত্রে তাঁকে ভাবতে অসুবিধে হয়নি। সারাজীবনে এই প্রথম তুলসী চক্রবর্তী এমন একটি ছবিতে অভিনয় করলেন, যেখানে তিনিই নায়ক। তাঁর অভিনয় সেই চরিত্রটিকেই অবিস্মরনীয় করে তুলল। এই ছবিতে তিনি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন পনেরোশো টাকা। সেটা নিতেই তাঁর দ্বিধার অন্ত ছিল না। কারণ, তখন তিনি মাত্র একশো পঁচিশ টাকার দৈনিক পারিশ্রমিকে কাজ করতেন। এর বেশি কেউ দিতে চাইলেও তিনি নিতেন না। তিনি ছিলেন এমনই বিরল অভিনেতা, এমনই বিরল ভদ্রলোক।

তুলসী চক্রবর্তী নিছক কৌতুক অভিনেতা ছিলেন না, তাঁর ছিল বহুমুখী প্রতিভাবান শিল্পী। সেলুলয়েডে বিভিন্ন ছবির স্বল্প পরিসরেও সেই প্রতিভার অবিস্মরনীয় স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ‘রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত’ ছবিতে তবলিয়ার ভূমিকায় কালোয়াতি গানে অসাধারণ তবলা বাজিয়েছেন। ‘কবি’ ছবিতে দেখেছি তাঁর নাচ। ‘শুভদা’ ছবিতে নিজের কন্ঠে গান গেয়েছেন। আবার ‘ভাবীকাল’ ও ‘জনক নন্দিনী’ ছবিতে সিরিয়াস চরিত্রেও অনবদ্য অভিনয় করেছেন। প্রতিভাবান এই শিল্পী জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৯৯ সালের ৩ মার্চ।

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

https://www.youtube.com/channelhindustan

https://www.facebook.com/channelhindustan

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *