নীল বণিক :
দিল্লিতে দোস্তি হয়েছে, রাজ্যে কী আর বিবাদ মানায়! মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের প্রশংসা করলেন। তাঁর প্রশংসাবাক্য বিধানসভার রেকর্ডেও রয়ে গেল। বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পাহাড় ইস্যু নিয়ে কংগ্রেসের প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামেদের জন্য অবশ্য কড়া কথাই বরাদ্দ ছিল।
কংগ্রেসের পরিষদীও দলের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “পাহাড় নিয়ে প্রকাশ্যে কংগ্রেস এমন কোনও বক্তব্য রাখেনি যাতে পাহাড়ের দলগুলি অক্সিজেন পায়। তবে দুঃখের বিষয় বামেরা সেই রাস্তায় হাঁটেনি।”
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বামেরা ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে। যার ফলে পাহাড়ে অশান্তির পারদ দিন-দিন চড়ছে। বাম বিধায়কদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, পাহাড় বাংলার ছিল, আছে এবং তা ভবিষ্যতেও থাকবে। চক্রান্তকারীরা যতই চেষ্টা করুক না কেন!
মুখ্যমন্ত্রী যখন পাহাড় ইস্যুতে বামেদের টানা আক্রমণ করছেন, ঠিক সেই সময়ে সেখানে উপস্থিত থাকা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান একেবারে নিশ্চুপ। অবশ্য সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে বিধানসভা নির্বাচন লড়ে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়া কংগ্রেস সম্প্রতি লাইন বদল করেছে। সারা দেশে বিজেপিকে ঠেকাতে সনিয়া -রাহুল এখন ভর্সা করছেন মমতার ওপর। মমতাও ‘সৌজন্যের’ খামতি করছেন না। প্রদীপ ভট্টাচার্যকে ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় পাঠিয়েছেন। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার ঘরে বসে গল্পগুজব করেছেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও সাম্প্রতিক দেওয়াল লিখন পড়ে ফেলেছেন! তাই মুখ্যমন্ত্রী যখন বামেদের কড়া সমালোচনা করছিলেন মান্নান তখন প্রত্যাশিতভাবেই চুপ করে ছিলেন। দেখার মত এইটুকুই যে কংগ্রেস-সিপিএমের সাম্প্রতিক রসায়ন এদিন বিধানসভার রেকর্ড বুকেও ঢুকে পড়ল।
এমনকী কিছু সময় পরে যখন সরকার পক্ষের বিধায়কদের সঙ্গে বাম বিধায়কদের কলহ চরমে ওঠে, তখনও কংগ্রেস বিধায়করা রা কাটেননি।
সাধারনত বাম বিধায়কদের পাশে দাঁড়িয়ে এতদিন কাঁধে কাঁধ রেখে চলতেন কংগ্রেস বিধায়করা। মঙ্গলবারের বিধানসভার চিত্র জানান দিয়ে দিল নতুন সমীকরণ শুরু হয়ে গেছে। এদিনের পর থেকে একাধিক ইস্যুতে বাম বিধায়কদের কী একাই লড়াই করতে হবে! প্রশ্ন রয়ে গেল রাজনৈতিক মহলে।