দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
শোভন-রত্নার জীবনে কাল বৈশাখী!
পাগলের মতো ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। রত্না যেদিন তাঁর হাত ধরে ছিলেন সেদিন শোভনের ভবিষ্যৎ ছিল অনিশ্চিত। রত্নার বাবা রাজি ছিলেন না বিয়ে দিতে। প্রেমে উন্মাদ শোভন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের কানন, একদিন কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘দিদি’ মমতার কাছে। রত্নাকে না পেলে তিনি বাঁচবেন না! মমতা দেখা করলেন রত্নার বাবা, সেই সময় সোমেন মিত্র ঘনিষ্ঠ দুলালের সঙ্গে। মমতার উদ্যেগে জয়ী হল প্রেম। দাম্পত্য জীবন শুরু হল শোভন-রত্নার। শোভনের রাজনৈতিক কেরিয়ারও উঠতে লাগল ওপরের দিকে। কাউন্সিলর, তদুপরি তৃণমূল কংগ্রেসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ। মমতার ছায়াসঙ্গী। সব লড়াইতে, মিছিলে, জনসভায় নেত্রীর ডান কাঁধের ঠিক পিছনে যে মুখটি সর্বদা দেখা যেত, সেটি শোভনের মুখ। অনেক যোগ্য, হেভিওয়েট দাবিদারকে উপেক্ষা করে মমতা মেয়র পদে বসালেন শোভনকে। পরিবর্তনের পর তাঁকে মন্ত্রী করেন নি বলে অভিমান হল ‘ছোট ভাই’ কাননের। শপথের দিন, যাঁরা মন্ত্রী হবেন, তাঁদের সকলকে মমতা বলেছিলেন ধুতি পাঞ্জাবি পরতে। শোভনও সেদিন থেকে শুরু করলেন ধুতি পাঞ্জাবি পরা। মমতাকে বোঝাতে চাইলেন তাঁর মনের অভিপ্রায়! একদিন মন্ত্রীও হলেন।
যাঁকে জীবনসঙ্গিনী করে সৌভাগ্যের সিঁড়িতে পা রেখেছিলেন শোভন, সৌভাগ্যের আতিশয্যে তাঁর সঙ্গেই কী দুরত্ব বাড়তে শুরু করেছিল তাঁর! ছবি তুলতে ভালোবাসেন শোভন। তাঁর মনেও কী অন্য কারও ছবি ক্রমশ জায়গা করে নিচ্ছিল! না। রাজনীতি করলে বা যে কোনও পাবলিক লাইফে থাকা মানুষের এমন বদনাম, গসিপ নতুন কিছু নয়। তাঁর সম্পর্কেও গসিপ ছড়াতে লাগল। তিনি নাকি কোনও এক অভিনেত্রী -বিধায়িকাকে মুক্তোর হার পরিয়ে দিয়েছেন বিধানসভার ভেতরেই! সেই কারণে নাকি তিনি আর এক বিধায়ক তথা মন্ত্রীর কাছে চড় খেয়েছেন, বিধানসভার ভেতরেই! সম্প্রতি শোনা গেল তাঁর হৃদয়ে নাকি নতুন করে দোলা দিয়েছে কোন এক বৈশাখী হাওয়া! “বৈশাখী ঝড়ে আমি তোমাকে চাই” ব’লে কানন নাকি নতুন প্রেমে মজে আছেন!
এইসব গসিপ নিশ্চয়ই রত্নার কানেও পৌঁছল। সম্পর্কের মন্থনে উঠে এল বিষ।
এখন শোভন স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় ছুটছেন। একবার নয়, বারবার।
এত সাফল্যেও শান্তি নেই শোভনের। রত্না বলেছেন, তিনি ২২ বছর আমার সঙ্গে শান্তিতেই ছিলেন। কী তাঁর অশান্তি তিনি নিজেই জানেন! রত্নার বিরুদ্ধে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন শোভন। রত্না বলেছেন, “তিনি স্বপ্ন দেখে থানায় ছুটে গেছেন। আমায় নিয়ে রোজ দুঃস্বপ্ন দেখেন শোভনবাবু!”
রত্নার এই কথায় বেদনা আছে। শোভনের থানায় ছুটে যাওয়াতেও হয়তো দিশাহীনতা আছে।
হাঁড়ির খবর রাখিয়েরা বলছেন, ঝড় থামলে হয়তো আবার সব স্বাভাবিক হবে।
কবে থামবে শোভনের মনোজগতের কাল বৈশাখী!
উত্তর নেই।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan