Breaking News
Home / TRENDING / দক্ষিণে অশনি সংকেত, উত্তর খুঁজতে ফের কর্মীসভা তৃণমূলের

দক্ষিণে অশনি সংকেত, উত্তর খুঁজতে ফের কর্মীসভা তৃণমূলের

নীল রায়:

দক্ষিণ কলকাতার লোকসভা আসনটি  নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই তৃণমূল কংগ্রেসে! যে লোকসভা কেন্দ্র থেকে ছয় বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে গিয়েছেন। সেই কেন্দ্রে এবার অশনি সংকেত দেখেছে দল।

গত ১২ মার্চ কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ কলকাতা আসনে প্রার্থী হিসেবে মালা রায়ের নাম ঘোষণা করেন। ১৭ মার্চ নজরুল মঞ্চে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভায এলাকার তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন ডাকা হয়। গত দুই বারের সাংসদ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবার ভোটে দাঁড়াননি। তাই ওই সম্মেলনে সব নেতাকেই বলতে শোনা গিয়েছিল প্রার্থী মালা রায় হলেও, আসলে দক্ষিণ কলকাতায় দলের মুখ তৃণমূল সুপ্রিমোই। এমত অবস্থায় একটি সম্মেলনে যথেষ্ট নয় কর্মীদের জন্য, এমনটাই মনে করছে শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই আবারও ২৫ মার্চ বেহালা শরৎ সদনে বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য পৃথকভাবে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন ডাকা হয়েছে। তৃণমূলের এক যুব নেতার কথায়, “দল প্রয়োজন মনে করেছে বলেই বেহালার দুটি বিধানসভার জন্য প্রথমবার সম্মেলন ডাকা হয়েছে। দেখা যাক বেহালার জন্য কোনও পৃথক রণনীতি দল স্থির করে কিনা।”

২০০৯ সালের লোকসভা ভোট থেকে বেহালার দুটি আসন দক্ষিণ কলকাতার অংশ হয়েছে। তার আগে যাদবপুর লোকসভার অংশ ছিল বেহালা জনপদের দুই বিধানসভা। ২০০৯ সাল থেকে তিনবার লোকসভা ভোটের সম্মুখীন হয়েছে দক্ষিণ কলকাতা। ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী ছিলেন তৃণমূলের। ২০১১ সালের ২০ মে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলে দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ পদ ছাড়তে হয় তাঁকে। ফলে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভায় উপনির্বাচন হয়। তৃণমূলের প্রত্যাশা মতোই জয় পান সুব্রত বক্সি। ২০১৪ সালেও জোড়া ফুল প্রতীকে প্রার্থী হয়ে জেতেন সুব্রত বক্সি। এই তিনবার কখনোই পৃথক কর্মী সম্মেলন ডাকা হয়নি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে বিশেষ পরিস্থিতিতে পড়েই বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম আসনের জন্য একটি পৃথক কর্মী সম্মেলন ডাকা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত প্রায় দেড় বছর ধরে বেহালায় থাকছেন না বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজের পর্ণশ্রীর বাড়ি ছেড়ে এখন তাঁর বাস গোলপার্কের একটি ফ্ল্যাটে। পারিবারিক সমস্যার কারণে নিজের বিধানসভা এলাকা বেহালা পূর্বেও খুব একটা আসেন না তিনি। তাই সাংগঠনিক অভাব রয়েছে সেখানে। আবার ২০১১ সালে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৫৯ হাজার ২১ ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। মাত্র ৫ বছরেই তার গ্রাফও তলানীতে ঠেকেছে। ২০১৬ সালে তিনি জয় পেয়েছেন মাত্র সাড়ে আট হাজার ভোটে। ৫ বছরের ব্যবধানে এই ৫১ হাজার ভোট কমে যাওয়ার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাছাড়া ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র থেকে ১৭৬ ভোটের ব্যবধান পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী তথাগত রায়। শেষ বিধানসভা ভোটে কসবা কেন্দ্র থেকে মাত্র একটি ওয়ার্ডে ব্যাপক লিড নিয়ে কোনওরকমে জিতেছিলেন মন্ত্রী জাভেদ খান। সঙ্গে চলতি ভোটে নরেন্দ্র মোদীর গেরুয়া প্রভাব যে দক্ষিণ কলকাতার ভোটারদের মধ্যে তীব্র ভাবে কাজ করবে তার আভাস পেয়ে গিয়েছে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাছাড়া দক্ষিণ কোলকাতা আসনের জন্য সুব্রত বক্সীর বদলে তৃণমূল নেত্রীর প্রথম পছন্দের প্রার্থী ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতায় রাজনীতির দলগত অবস্থান জেনে সুব্রত মুখোপাধ্যায় নিজের জন্য বাঁকুড়ার মতো তুলনামূলক নিরাপদ আসন বেছে নেন বলেই সূত্রের খবর।

জানা গিয়েছে, এমন সব বিষয়ে আলোকপাত করে পৃথক কর্মী সম্মেলন ডেকে সাংগঠনিক মেরামতির কাজ করা হবে আগামী ২৫ মার্চ।

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *