কমলেন্দু সরকার :
রজনীকান্ত সমকালীন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মতো অতো গান লেখেননি কিন্তু তাঁর সুরের সারল্য সঙ্গীতপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে যায়।
১৮৬৫-র ২৬ জুলাই রজনীকান্তের জন্ম পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার গ্রাম ভাঙাবাড়িতে। বাবা গুরুপ্রসাদ সেন, মা মনোমোহিনী দেবী। গুরুপ্রসাদ মুনসেফ থেকে বরিশালের সাব জজ হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কবি।
রজনীকান্তের ছোট থেকেই পড়াশোনার চেয়ে গানবাজনায় ঝোঁক ছিল অনেক বেশি। অল্প বয়স থেকেই ভাল বাঁশি বাজাতেন রজনীকান্ত। বন্ধু তারকেশ্বর চক্রবর্তীই ছিলেন তাঁর সঙ্গীতগুরু। সুগায়ক ছিলেন রজনীকান্ত।
কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর আইন নিয়ে পড়াশুনো করেন। তারপর ওকালতি করেন রাজশাহীতে।
সেখানেও বিভিন্ন জায়গায় গান গাইতেন কবিতা পাঠ করতেন। ১৯০২-এ তাঁর প্রথম বই ‘বাণী’ প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে খুব উৎসাহিত করতেন। রজনীকান্তের জীবিতকালে তিনটি এবং মৃত্যুর পর পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছিল।
রজনীকান্তের গানের সংখ্যা প্রায় তিনশো। তাঁর গান হল—- ভক্তিমূলক, দেশাত্মবোধক, হাস্যরস এবং জীবনের গান। তাঁর ভক্তিমূলক গান শুনলে বোঝা যায় তিনি নিজেকে কতটা সমর্পণ করেছিলেন ঈশ্বরের কাছে!
রজনীকান্ত ছিলেন স্বদেশী আন্দোলন যুগের কবি। ১৯০৫-এ ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম একজন। বিদেশি বস্ত্র বর্জনের সময় তিনি গেয়েছিলেন ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই’। কান্তকবির এই গান সেদিন বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছেছিল।
গলার ক্যানসারে আক্রান্ত রজনীকান্ত প্রয়াত হলেন ১৯১০-এর ১৩ সেপ্টেম্বর। রোগশয্যায় তাঁর পাশে এসে বসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। চলে গেলেন বিশ শতকের বাংলা গানের এক পথিকৃৎ। তিনি ছিলেন বাংলা ছবির মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের দাদু।
জন্মদিনে চ্যানেল হিন্দুস্তানের শ্রদ্ধার্ঘ্য।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন