দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
ঈষাণিকা ভোরাই :
রাহুল গান্ধিকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা রকম মস্করা চলে। তাঁকে ঠাট্টা করে ‘পাপ্পু” বলে ডাকেন সোশ্যাল মিডিয়ার মোদি ভক্তরা। এ হেন নামকরণের কারণ একটাই, রাহুল গান্ধি যে রাজনীতিতে অপরিণত তা বোঝানো। যদিও এই মতামত নিতান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত। তবে আজ, মঙ্গলবার নয়া দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করলেন, তাতে উৎসাহ পাবেন এইসব ফেসবুক-ট্যুইটার করিয়েরা।
এদিন দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মমতা জানান, “সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ তাই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। সেই সময় সাংবাদিকরা তৃণমূলনেত্রীকে প্রশ্ন করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তিনি দেখা করবেন কিনা! উত্তরে তৃণমূলনেত্রী যা বললেন তা এরকম, ‘কংগ্রেসে তো একজনই নেতা সোনিয়া গান্ধী আর সোনিয়াজির সঙ্গে প্রায় দিনই ফোনে কথা হয়। সবার সঙ্গে কথা বলার দরকার কী!’ মমতাকে যাঁরা চেনেন তাঁরা জানেন, কোনও কাজই মমতা করেন না, যা রাজনীতির বাইরে। কোনও কথাই মমতা বলেন না,যে কথার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। সম্প্রতি যে দুটি জোট প্রক্রিয়া দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে তার পরিণতিতে অন্তত একটিতে রাহুলই হবেন নেতা। আবার আর একটি জোট যদি কোনও ভাবে প্রথম জোটের সঙ্গে মিশে যায়, তাহলেও নেতা সেই রাহুলই। মমতা ইতিমধ্যেই বলেছেন, ‘বাংলা দেশকে নেতৃত্ব দেবে কিন্তু নিজের জন্য কিছু নেবে না।’ কোনও কোনও রাজনৈতিক বোদ্ধা মনে করছেন বাংলা বলতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা নিজের কথাই বলেছেন। তিনিই নেতৃত্ব দেবেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পদ নেবেন না। অর্থাৎ কিং মেকার-এর ভূমিকা নিতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার বক্তব্যের এই রকমই ব্যখ্যা করছেন অনেক রাজনৈতিক ভাষ্যকার। এই ব্যাখ্যা মেনে নিলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে রাহুলকে খাটো করে দেখানো বা গুরুত্বহীন হিসেবে উপস্থাপিত করা মমতার সুচিন্তিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ। এবং দেশের রাজধানীতে দাঁড়িয়ে, সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে মমতা করেছেনও তাই। কংগ্রেস সভাপতির জন্যে অপমানজনক হবে কি না, সে সব তোয়াক্কা না করে নিজের খেলা খেলে দিয়ে এসেছেন। তবে আঘাত করার পর ক্ষতে প্রলেপ দিতেও ভোলেননি। বলেছেন, ‘রাহুলের সঙ্গেও কথা হয়।মাঝেমধ্যে এসএমএস-ও চালাচালি হয়।’ এখানেও মমতা কথায় ও বাচনভঙ্গিতে বোঝাতে কসুর করেননি যে তাঁর চোখে রাহুল ‘এলেবেলে’!
সমস্যা হল একজন ব্যক্তির(নরেন্দ্র মোদি) বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে যখন জাতীয় রাজনীতির দুনিয়ায় সাপে নেউলে, বাঘে গরুতে, তেলে জলে, সাদায় কালোয়, আদায় কাঁচকলায়, বুনোওলে বাঘা তেঁতুলে মিলেমিশে একটি বিরাট বকচ্ছপ মূর্তি তৈরি হওয়ার উপক্রম হয়েছে, সেখানে চক দে ইন্ডিয়া ছবির দুই স্ট্রাইকারের মতো মমতা -রাহুল যদি একে অপরকে পাস না দিয়ে খেলেন তাহলে তো চিত্তির!
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan