দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুরভোটে দলের যাঁরা নির্দল প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের জন্য বহিষ্কারের খাঁড়া ঝুলছে।
খুবই স্বাভাবিক ঘোষণা।
তবে এর পরেই তিনি বলেন, নির্দল প্রার্থীদের মধ্যে যদি কেউ জিতেও আসেন, তাঁদের গ্রহন করবে না দল।
এই বক্তব্যে একটি প্রশ্ন উঠছে।
প্রশ্নটি এই, তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে মানুষ যাঁদের চাইছে, দল তাঁদের চাইছে না? কারন যাঁরা জিতে আসবে, তাঁরা মানুষের আশীর্বাদ পাবে। কিন্তু এঁরাই দলের মনোনয়ন পাননি। তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে মানুষের মন আর পার্থ-বক্সীর স্বাক্ষর সম্বলিত মনোনয়নে ফারাক রয়ে গেছে? তাহলে কি বুঝতে হবে, যে সকল জেলা সভাপতি বা সাংসদ, বিধায়ক কিংবা আই-প্যাক, যাঁদের চোখ দিয়ে দেখে এবং যাঁদের কান দিয়ে শুনে প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে, তাঁরা শীর্ষ নেতৃত্ব কে জনমানসের ভুল ছবি দেখাচ্ছেন?
এই তর্কে অবশ্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থান নেই। আরামবাগে মমতার নামে জয়ধ্বনি তুলেই নির্দল প্রার্থী মিছিল বার করেছেন, এই খবর এখন সকলেরই জানা। শুধু আরামবাগ নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসছে নির্দল প্রার্থীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে মাথায় রেখেই প্রচার করছেন।
সুতরাং, এটা বলাই যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর দলের অফিসিয়াল গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নেই। তিনি যেমন দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের নেত্রী আবার বিক্ষুব্ধদেরও নেত্রী। বিক্ষুব্ধদের ক্ষোভ যে তাঁর প্রতি নয়, বরং দল ও শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যবর্তী ক্ষমতাভোগী একটি অংশের প্রতি যে তাঁদের যাবতীয় ক্ষোভ-বিক্ষোভ, তা স্পষ্ট।
ফলতঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে কথা বলেছেন, তা পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে কিনা তা পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বলতে পারবেন। মমতার নাম মাথায় নিয়ে মানুষের ভোটে যাঁরা জিতে আসবেন, তাঁদের দলে ঠাঁই না দিলে মানুষের রায়কে অগ্রাহ্য করা হবে কিনা, সেটাও দল বিচার করতে পারে।