মধুমন্তী
এতদিন ছিল শাসক দল বা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তবে এবার সরাসরি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনল ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। হয়তো বা এর আগেও ছিল এই অভিযোগ তবে এবার প্রকাশ্যে সামনে আসল সেই ক্ষোভের কথা। কারণ, ভুল খবর প্রচার করায় একটি পিটিশনের পেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরে এসেছে গত কয়েকদিনে। এমন ঘটনা ছাত্র আন্দোলনের তরফ থেকে আগে কখনও সামনে আসেনি।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ঘোষিত নিয়ম অনুযায়ী কলেজে থাকবে না ছাত্র ইউনিয়ন, হবে ছাত্র কাউন্সিল। সেই নিয়েই অবস্থান বিক্ষোভ চলছিল যাদবপুরে তবে কিছু সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ করা হয়, যে এই বিক্ষোভের জেরে বন্ধ পঠন-পাঠন। তবে এমন কিছুই নাকি হয়নি, সমানভাবে চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, জানান যাদবপুরের ফার্মাসিউইক্যাল টেকনোলোজির পড়ুয়া হিরণময় ভট্টাচার্য। তিনি আরও বলেন, “সাংবাদমাধ্যমগুলো ছাত্রছাত্রীদের গণতন্ত্রিক অধিকার রক্ষার দাবিতে যে আন্দোলন, সাধারণ মানুষের সামনে তার যুক্তিগুলোকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্দোলনগুলো দানা বাঁধছে পারছে না।”
শুধু যাদবপুর নয় সম্প্রতি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিক্ষোভের ছবিও সামনে এসেছে। ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বিক্ষোভের কারণ নিয়েও। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কাউন্সিলে থাকতে হবে ছাত্র প্রতিনিধিত্বের পদ। কিন্তু সেই পদ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। মূলত এই নাকি ছিল বিক্ষোভের কারণ। তবে মানুষের সামনে আসে ফেল করা পড়ুয়াদের পাশ করানোর কথা। তাই নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। হিরণময় আরও বলেন, “সংবাদমাধ্যম স্বাধীন কিছু নয় বা মানুষের জন্য কাজ করে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কোথাও তাদের স্বার্থও রয়েছে। যে খবর মানুষ খাবে, তাই তারা খাওয়াবে।”
‘সংবাদমাধ্যম সমাজসেবা করতে নামেনি’, কোথাও কোথাও এমন বক্তব্য উঠে এসেছে। তার প্রেক্ষিতে হিরিণময় জানান, “সততা কোনও সমাজসেবা নয়। বরং মিথ্যে বললে সেটা সমাজের কাছে অপরাধ। সেইসঙ্গে সংবাদমাধ্যম গোটা দেশ দেখেন। সেখানে মিথ্যে খবর প্রচার হলে, ভুল তথ্য মানুষের সামনে আসবে।”
যাদবপুরের গবেষক প্রিয়স্মিতা দাসগুপ্তর কথায়, “সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের টিআরপি আর বিক্রির কথা মাথায় রেখেই খবর করে আসছে। আজ কিছু নতুন নয়, ২০১৪-এ যাদবপুরে লাঠি চার্জের সময়ও দেখা গেছিল, সম্প্রতি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও দেই ঘটনা নজরে এসেছে। সংবাদমাধ্যম খবর করে, খবর বানানো তাদের কাজ নয়। তাই যে সত্যিটা ঘটছে সেটাই প্রকাশ করুক তারা। এভাবে মানুষের আস্থা হারাচ্ছে তারা।”
এই সম্প্রসারণের ফলে জনমানষে ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে এবং ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে বিরূপ ধারণা তৈরির চেষ্টা লক্ষ করছেন কেউ কেউ। তাই সবমিলিয়ে এসবের মধ্যে একটা চক্রান্ত বা অনুসন্ধির গন্ধই পাচ্ছেন পড়ুয়ারা।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন