Breaking News
Home / TRENDING / মোদির ‘উন্নয়ন’ না মমতার ‘তোষণ’, সংখ্যালঘুদের মন বুঝতে চান মুকুল

মোদির ‘উন্নয়ন’ না মমতার ‘তোষণ’, সংখ্যালঘুদের মন বুঝতে চান মুকুল

দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :

একশ নম্বরের পরীক্ষায় বত্রিশ নম্বর বাদ দিয়ে বসা যায় নাকি?
বলছেন মুকুল রায়। শুধুমাত্র সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডাতেই বলছেন এমনটা নয়, মুকুল জানাচ্ছেন, বিজেপির শীর্ষ নেতাদেরও তিনি একই কথা বলেছেন এবং তাঁরাও মুকুলের সঙ্গে একমত।
পরীক্ষা মানে ভোটের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সংখ্যালঘুদের বাদ রেখে শুধুমাত্র সংখ্যাগুরুদের নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার চেষ্টা কোনও কাজের কথা নয়।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কয়েক মাস আগে কলকাতায় এসে প্রায় একই কথা বলে গেছিলেন। অমিতের বক্তব্য ছিল, হিন্দুত্ব নয়, রাষ্ট্রবাদ।
তাঁরা যাই বলুন না কেন মোটের ওপর বিজেপি বা সঙ্ঘ সম্পর্কে এখনও সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশের ধারণা বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। সোজা কথা সোজা ভাবে বললে, তাঁদের ধারণা বিজেপি মুসলিম বিদ্বেষী।
কয়েক মাস আগে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। আরএসএস নজরুলের জন্মজয়ন্তী পালন করায় কবির পরিবারের কেউ কেউ এর মধ্যে রাজনীতি দেখেছিলেন। যদিও সঙ্ঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নজরুলের জন্মদিন সঙ্ঘ চিরকাল পালন করে আসছে। এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। সঙ্ঘের ড. জিষ্ণু বসু আক্ষেপ করেছেন সঙ্ঘ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণায় গলদ আছে। তাঁর মতে এই ধারণা দিনে দিনে তৈরি হয়েছে। তৈরি করেছে মূল ধারার সংবাদ মাধ্যম। একই সঙ্গে জিষ্ণু মনে করেন, এমন ধারণা তৈরি হওয়ার পিছনে তাঁদের নিজেদের ভূমিকাও কম নয়। তাঁর কথায়,”আমরা আমাদের বক্তব্য সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারি নি।” যে নজরুল সঙ্ঘের অন্যতম প্রাতঃস্মরণীয়, তাঁর জন্মদিন পালন করতে গিয়ে সঙ্ঘকে বিরুপ সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে! যে কোনও কারণেই হোক সঙ্ঘ সিংহভাগ মানুষকে জানাতে বা বোঝাতে সক্ষম হয় নি যে তাদের প্রাতঃস্মরণীয়দের তালিকায় নজরুলের মত এমন আরও অনেকে রয়েছেন যাঁদের ধর্মীয় পরিচয় হিন্দু নয়।
মুকুল রায় যখন তৃণমূল ছেড়ে ‘ছুটিতে গেলেন’, অবশ্যই কৌশলী ছুটিতে, সেই সময় তাঁর অনুগামীদের একটা বড় অংশ চাইছিলেন তিনি নিজের দল গঠন করুন। যাঁরা চাইছিলেন তাঁদের মধ্যে যেমন তাঁর সংখ্যালঘু অনুগামী ছিলেন, তেমন সংখ্যাগুরুদেরও একটা বড় অংশ ছিলেন। তাঁদের নতুন দল চাওয়ার কারণটা সহজ। তৃণমূলের মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক ভেঙে বিজেপির দিকে নিয়ে আসা একপ্রকার অসম্ভব বলেই ধরে নিয়ে ছিলেন তাঁরা। আর মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে বড়সড় ভাগ বসাতে না পারলে এ রাজ্যে যে কোনও আশা নেই এ কথা একটি শিশুও জানে!
মুকুল এখন এই ‘ভোট ব্যাঙ্ক’ ধারণাটিকেই কাজে লাগাতে চাইছেন বিজেপির অনুকূলে।
সেই কবিতার ‘রেখেছ বাঙালি করে’ টাইপ মুসলিমদের ভোট ব্যাঙ্ক করে রাখার রাজনৈতিক কৌশলের গোড়ায় আঘাত করতে চাইছেন মুকুল।
কোনও রাজনৈতিক দলের ভোট ব্যাঙ্ক হয়ে থাকার সুবিধা কিছু আছে আবার অসুবিধাও কম নেই। সুবিধা বলতে মূলতঃ তোষণ। খোশামোদী, পাইয়ে দেওয়া ইত্যাদি। যদিও এই ধরণের অনৈতিক সুবিধা মুসলিম ভোটার পর্যন্ত পৌঁছয় না। যাঁদের কথায় ভোট হয় বা যাঁদের কথার মূল্য আছে মুসলিম ভোটারদের মধ্যে, তাঁদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছয়। আর অসুবিধা? এই ভাবে ভোট বাগাতে পেরে ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক দলগুলির তাঁদের উন্নয়ন নিয়ে, তাঁদের জীবনযাপনের মানোন্নয়ন নিয়ে আর ভাবার দরকার পড়ে না!
রাজ্যে কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের মত তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক, মুসলিম দরদী সরকারের শাসনের পরেও ফুরফুরায় ত্বহা সিদ্দিকির সভায় ব্যানারে লেখা থাকে ‘সমাজের পিছিয়ে পড়া এবং পিছিয়ে রাখা মুসলিম’! সেই সভায় মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের জন্য কাজের খতিয়ান দিতে শুরু করলে লোক উঠে যেতে থাকে। কিন্তু সাধারণ ভাবে ধর্মপ্রাণ এই সম্প্রদায়টি মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উদ্বেল হয়ে ওঠে যখন তিনি বলেন, ‘আমি কিসের মাংস খাব সেটা কী বিজেপি ঠিক করে দেবে!’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রোটেকশন দেব’। বিজেপি মানেই গোমাংস ভক্ষণ বন্ধ করে মুসলিমদের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ! বিজেপি মানেই মুসলিমদের নিরাপত্তা লাগবে!
সত্যিই কী তাই!
এসবের উত্তর খুঁজতে হবে সোমবার কলামন্দিরে। ভারতীয় জনতা মাইনরিটি মোর্চার সভায়।
বক্তা :
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, স্বপন দাশগুপ্ত, অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়, সৈয়দ তনভীর নাসরিন, মাসুম আখতার এবং মুকুল রায়।

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

https://www.youtube.com/channelhindustan

https://www.facebook.com/channelhindustan

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *