ওয়েব ডেস্ক :
ভারতের দ্বিতীয় এবং বাংলার প্রাচীনতম রথযাত্রা উৎসব এই মাহেশের রথ। মাহেশের রথের শুরু ১৩৯৬ থেকে, মাহেশের রথের মেলা চলে মাসখানেক ধরে।
মাহেশের জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে মাসির বাড়ি গুণ্ডিচা মন্দিরে যাত্রা জগন্নাথ সুভদ্রা বলরাম। উলটোরথের দিন মাসির বাড়ি থেকে জগন্নাথদেব ফেরেন তার মূল মন্দিরে।
মাহেশের রথযাত্রা নিয়ে প্রচলিত এক কিংবদন্তি হল—১৪ শুতকে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক সাধু গিয়েছিলেন পুরী। তাঁর মনের ইচ্ছে ছিল নিজের হাতে ভোগ রেঁধে খাওয়াবেন জগন্নাথ দেবকে। কিন্তু বাদ সাধলেন পান্ডরা। মনে কষ্ট নিয়ে বসলেন তিনি আমরণ অনশনে। কেটে গেল তিন তিনটে দিন। জগন্নাথদেব দেখা দিলেন তাঁকে। তিনি বললেন, “ধ্রুবানন্দ তুমি বাংলাদেশে ফিরে যাও। সেখানে গঙ্গার ধারে মাহেশ নামে এক গ্রাম রয়েছে, ওই গ্রামে যাও। আমি সেখানেই পাঠিয়ে দেব দারুব্রহ্ম। সেই কাঠে আমাদের তিন জনের মূর্তি গড়বি, পুজো করবি। মাহেশেই আমি তোর হাতের রান্না করা ভোগ খাব।”
জগন্নাথদেবের কথা শুনে তিনি চলে এলেন মাহেশে। ধ্রুবানন্দ এক বর্ষার দিনে বসেছিলেন গঙ্গার ধারে। তিনি দেখলেন, এক বিশাল নিম কাঠ ভাসতে ভাসতে এসে ঠেকল সেই ঘাটে। তিনি কাঠটি তুললেন, তিনজনের মূর্তি বানালেন, প্রতিষ্ঠা করলেন জগন্নাথদেবের মন্দিরে।
১৭৫৫-তে বর্তমান মন্দিরটি বানিয়েছিলেন কলকাতার নয়নচাঁদ মল্লিক। বর্তমান রথটি ১৩০ বছরের পুরনো। সেইসময় ২০ হাজার টাকা খরচা করে হুগলির দেওয়ান কৃষ্ণচন্দ্র বসু রথটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। রথের উচ্চতা ৫০ ফুট, ওজন ১২৫ টন, রথের চাকা ১২ টি। বঙ্কিচন্দ চট্ট্যোপাধ্যায়-এর কাহিনি ‘রাধারানী’র প্রেক্ষাপট ছিল এই মাহেশের রথযাত্রা। রামকৃষ্ণদেব, মা সারদাদেবী, নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্ট্যোপাধ্যায় প্রমুখ বিখ্যাত মানুষেরা এসেছিলেন মাহেশে।
মাহেশ এবং পুরীর রথের ভিডিয়ো দেখুন।