রন্তিদেব সেনগুপ্ত :
বাঙালি সেকুলার বুদ্ধিজীবীদের একটি প্রধান সমস্যা হল তাঁরা কান ঢাকা টুপি পরে থাকেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘মুক্তধারা’ নাটকে এই কান ঢাকা টুপির উল্লেখ করেছিলেন। মুক্তধারা নাটকে শিবতড়াই গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের পণ্ডিতমশাইয়ের নিদানে কান ঢাকা টুপি পরে থাকতেন। পণ্ডিতমশাই নিদান দিয়েছিলেন, কান ঢাকা টুপি পরে থাকলে বহির্জগতের কোনও শব্দ মস্তিষ্কে প্রবেশ করবে না। কিন্তু শিবতড়াই গ্রামের সবাই পণ্ডিতমশাইয়ের এই নিদান মেনে নেয়নি। যেমন ওই নাটকে ধনঞ্জয় নামে একটি চরিত্র বলেছিল, যে-দিকটা দিয়ে শোনা বন্ধ করবি সেদিকটা দিয়েই হিন্দুত্ববান আসবে। বাংলার সেকুলার বুদ্ধিজীবীরা এই কান ঢাকা টুপিটি পরে থাকার ফলে বহির্জগতের অনেক শব্দই তাঁদের মস্তিষ্কে প্রবেশ করে না। গতকাল মধুসূদন মঞ্চের সামনে একঝাঁক বাঙালি সেকুলার বুদ্ধিজীবী জড়ো হয়ে হিন্দুত্বের মুণ্ডপাত করলেন। তাঁদের সমর্থনে আবার কিছু সংবাদমাধ্যম কাড়ানাকাড়া পেটাতে শুরু করল। নেহরু বলেছিলেন, দুর্ঘটনাবশত আমি একজন হিন্দু। অথচ নেহরু ছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুর দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আসলে হিন্দু এবং হিন্দুত্বকে হেয় করার এই চক্রান্তের কারণ ভারতের জাতীয়তাবাদী আবেগকে বিনষ্ট করে দেওয়া। কেন না ভারতের জাতীয়তাবাদী আবেগটাই নির্ভর করে হিন্দু দর্শন, হিন্দু সংস্কৃতি এবং হিন্দু ধর্মের ওপর। এই চক্রান্তের ফলেই সেকুলার বামপন্থী এবং নেহরুপন্থী বুদ্ধিজীবীরা কালিয়াচক বা ধুলাগড়ের ঘটনা ঘটলেও চোখ বুঝে থাকে আর হিন্দুত্বের জুজু দেখিয়ে কলকাতার রাস্তায় হাততালি কুড়োতে নেমে পড়েন। মজার ব্যাপার হচ্ছে অভিনয়ে পারদর্শী এই নাটুকে ব্যক্তিত্বদের স্বরূপটি মানুষ ক্রমাগত বুঝে ফেলছেন। এঁরা বাম আমলে ছিলেন বুদ্ধপন্থী, এখন হয়েছেন দিদিপন্থী এবং অদূর ভবিষ্যতে কপালে গেরুয়া ফেট্টি বাঁধবে। তাতে অবাক হবেন না!