Breaking News
Home / TRENDING / দেবলোকে প্রেম

দেবলোকে প্রেম

  অহল্যা-ইন্দ্র কাহিনি  –

 কমলেন্দু সরকার     :
ব্রহ্মার মানসকন্যা অহল্যা। অপরূপ সুন্দরী। তাঁর শরীরে একতিলও খুঁত ছিল না। তাঁকে দেখে কামাসক্ত হত না এমন দেবতা প্রায় ছিল না বললেই চলে। এমন সুন্দরীর বিয়ে হল ঋষি গৌতম-এর সঙ্গে। বিয়ে দেন স্বয়ং ব্রহ্মা।
এই বিয়ের খবরে দেবতাকুল হতাশ। কিন্তু দেবরাজ ইন্দ্র হার মানতে নারাজ। একবার অহল্যাকে যখন মনে ধরেছে, তখন তার তাকে চাই-ই চাই। অহল্যার দেহ-সৌন্দর্যের আকর্ষণে ইন্দ্র হাজির হলেন ঋষি গৌতমের আশ্রমে। অবশ্যই ছদ্মবেশে এবং পরিচয় লুকিয়ে। তিনি ঋষির কাছে পাঠ নিতে চান। শিষ্যত্ব নিলেন। গুরুগৃহে জায়গা হল। অবশ্য কারওর কারওর মতে নিজ পরিচয় দিয়েছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র।
তিনি পড়ার অছিলায় খালি অহল্যার দর্শন পেতে চান। একদিন মিলেও গেল সুযোগ। স্নান-সারা অহল্যাকে দেখেন ইন্দ্র। তখন অহল্যার দেহ জুড়ে লাবণ্য ঢলে পড়ছে, ছড়িয়ে পড়ছে সুবাস। এই সৌন্দর্য কোনওদিন দেখেননি তিনি। হাজার অপ্সরাকেও মেলালে এমন রূপ পাওয়া যাবে না।
সেই সময় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না ইন্দ্র। তখন তিনি যে দেবরাজ এ খেয়ালও রইলো না। ইন্দ্রের চোখ দেখে বুঝলেন যুবতী অহল্যা। ইন্দ্রের রূপও টলিয়ে দিল অহল্যাকে। ঋষি গৌতমের সঙ্গে অহল্যার ছিল অনেকটাই বয়সের ফারাক। অহল্যারও সুপ্ত কামনা জেগে উঠল। অতৃপ্তির একটা জ্বালা আগুন ধরালো অহল্যার মনে। এমনকী শরীরেও। মিলন হল অহল্যা-ইন্দ্রের। ইন্দ্র-অহল্যা দু’জনে দু’জনকে চুম্বনে ভরিয়ে দিয়েছিল। দু’জনেই তৃপ্ত।
ইন্দ্রের শরীর তখন অহল্যার শরীরকে জড়িয়ে, এমন সময় ঋষির হুংকার—- অহল্যা। কোনও রকমে দু’জনে বেশবাস ঠিকঠাক করে উঠে দাঁড়ালেন। তখন ঋষির চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে। প্রথমে অহল্যাকে বললেন, তুমি নিজেকে কী করে অশুচি করলে অহল্যা!
অহল্যা একদম চুপ। চোখ মাটি স্পর্শ করছে। অহল্যাকে অভিশাপ দিলেন। বললেন, তোমার এই সুন্দর শরীর পাষাণে পরিণত হবে।
অহল্যা তখন বললেন, আমি জানি আমি অপরাধ করেছি। আমি অনুতপ্ত। অন্য কোনও শাস্তি দিন ঋষি।
হাজার হোক ব্রহ্মা বিয়েটা দিয়েছিলেন। নিজের স্ত্রী। মন একটু নরম হল। তিনি বললেন, ঠিক আছে তুমি যখন দোষ স্বীকার করছো, তখন বলছি দ্বাপরে রাম এই আশ্রমে এসে তোমাকে পাষাণী রূপ থেকে মুক্তি দেবে।
ইন্দ্রকে বললেন, আমি তোমার গুরু। অহল্যা গুরুপত্নী। আমি অভিশাপ দিচ্ছি সহস্র যোনিযুক্ত হবে তোমার শরীর। তাই হল। ঋষির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ইন্দ্র বললেন, আমাকে শাপমুক্ত করুন। এভাবে কী করে রাজত্ব করব স্বর্গে!
ঋষি গৌতম বললেন, তোমাকে শাপমুক্ত করতে পারে একমাত্র ব্রহ্মা। তাঁর কাছে যাও। অবশেষে তাই হল। দ্বাপরে অহল্যাকে মুক্ত করেছিলেন রাম ।

তবে পঞ্চসতীর এক সতী হলেন অহল্যা। তিনি প্রাতঃস্মরণীয়া।

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *