দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
সোমেন মমতা দ্বৈরথ রাজ্যের কং-ঘরানার রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। শিয়ালদার ছোটদা আর কালীঘাটের দিদির সম্পর্কের চাপানউতোর পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসকে তো কবেই দুভাগ করেছে ! তবু আমহার্স্ট স্ট্রীট আর হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রীটের যাঁরা জানার তাঁরা জানেন যে যুযুধান দু’জন কোনও দিন কারও বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেননি। প্রকাশ্যে তো নয়ই।
সোমেন মিত্র যখন তৃণমূল ছেড়ে আবার কংগ্রেসে ফেরার পথে, তখম মমতা নাম না ক’রে কিছু কটু কথা সোমেন সম্পর্কে বললেও, সোমেন সে পথে হাঁটেননি।
তারপর মমতার বাড়ির পেছনের আদি গঙ্গা দিয়ে আরও জল ব’য়ে গেছে। শিয়ালদার বৈঠকখানা বাজারে কত অগুন্তি ট্রাকের আনাগোনা হয়েছে। মমতা তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বের ব্যাস্ততায় এবং সোমেন তাঁর স্বভাবসুলভ প্রাজ্ঞ নীরবতায় একে অপরের থেকে আবার অনেক দুরে চলে গেছেন।
এরকম একটা আবহে হঠাৎ ক’রে মমতাকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন সোমেন। একটি সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আলোচনাসভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলতে বলতে মমতাকেও সাম্প্রদায়িক তকমায় দেগে দিলেন সোমেন। বললেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িকতা করছেন। সোমেনের এ হেন মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন আলোচনার রসদ জুগিয়েছে। ফুরফুরা শেরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দীকি কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিমপ্রীতি নাটক ছাড়া কিছুই নয়। বুদ্ধিজীবি মিরাতুন নাহারও এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যা কিছুই করছেন সবটাই দলীয় রাজনীতির স্বার্থে। প্রত্যাশীতভাবে বিজেপিও সোমেনের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ চ্যানেল হিন্দুস্তানকে জানিয়েছেন সোমেনের বক্তব্যের সঙ্গে একশ শতাংশ সহমত । তবে কলকাতা জাকিরিয়া স্ট্রীটের বড় মসজিদের ইমাম কাসমি সাহেব মমতার পক্ষেই সওয়াল করেছেন। এমনকি তাঁর বক্তব্য, সোমেন মিত্রের উচিত এখনই বক্তব্য প্রত্যাহার করা। অনেকদিন পর রাজ্য রাজনীতিতে সোমেন মমতা লড়াই আবার মাথা চাড়া দেয় কিনা তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে রাজ্য রাজনীতির কুশীলবদের। সোমেন মিত্র আর দীলিপ ঘষের বক্তব্য শুনতে দেখে নিন সঙ্গের ভিডিও।