কমলেন্দু সরকার ঃ
নব্বুই দশকের শুরু। একটি যুবক চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়ান বলিউডে। আরব সাগরের তীরে এই টিনসেল টাউনের যে বড়ই টান। যুবকটির সম্বল বলতে ঝুলিতে শুধুই ফৌজি আর সার্কাস। সঙ্গে দু’একটি টেলিফিল্ম। দিল্লির পাট চুকিয়ে এসেছেন মুম্বইয়ে। চলছে নিত্যদিনের সংগ্রাম। কোনও গডফাদারও নেই তাঁর। যাঁকে ধরে অন্তত এন্ট্রিটা নিতে পারেন। না, এভাবে তো আর চলে না। কিন্তু হাল ছাড়তেও চান না। তিনি কখনও কী শুনেছিলেন কবীর সুমনের ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কণ্ঠা ছাড়ো জোরে’। শুনলেও ভাষাটা তো তাঁর আয়ত্তে নেই। তবুও এই গানটাই যেন তাঁর জীবনের জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু কথায় আছে, যার কেউ নেই তার ভগবান আছেন। যুবকটির কাছে ভগবান হয়েই দেখা দিয়েছিলেন হেমা মালিনী। তিনি জানতেন যুবকটির নাম। তাঁর অভিনীত সিরিয়ালও দেখেছেন। হেমা তখন ছবি করছেন ‘দিল আশনা হ্যায়’। অভিনয় ভালই করে। নিলেন শাহ রুখকে। এই বলিউডে ঢুকে পড়লেন শাহ রুখ।
আর একটি ছবিতেও সুযোগ পেলেন শাহ রুখ খান। ছবির নাম ‘দিওয়ানা’। এই ছবিতে আছেন ঋষি কাপুরও। শাহ রুখের বিপরীতে দিব্যা ভারতী। ‘দিল আশনা হ্যায়’-এর আগেই মুক্তি পেল ‘দিওয়ানা’। ছবিতে সকলকে হাওয়া করে দিলেন শাহ রুখ। তারপর শুধুই সাফল্য। বলিউডে আগমন হল আর এক খানের। ক্রমে ক্রমে শাহ রুখ হয়ে উঠলেন বলিউড বাদশা।
শাহ রুখ দেখলেন শুধু নায়ক নয়, অন্য ধরনের চরিত্রেও অভিনয় করতে হবে। পাকাপাকি জায়গা করতে হবে দর্শকমনে। তাই নায়ক হতে এসে ‘বাজিগর’ এবং ‘ডর’-এ নেগেটিভ রোল করলেন। বাজিমাত করলেন। রোম্যান্টিক নায়ক হতে এসে নেগেটিভ রোলে অভিনয় করার এমন সাহস আর কোনও নায়ক দেখিয়েছেন বলে আমার মনে পড়ে না।
১৯৯৪-এ ‘আঞ্জাম’ ছবিতেও ভিলেন। ছবি সাফল্য না পেলেও শাহ রুখের অভিনয়ের জয়জয়কার চারিদিকে। সেরা ভিলেনের ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারও পেলেন। শাহ রুখের ছবি মানেই বক্স-অফিস হিট। তবে সবসময় তিনি শুধু বক্স-অফিসের দিকে তাকিয়ে অভিনয় করেন, তা নয়। অভিনয় করার সুযোগ থাকলে সে ছবিও করেন।
বলিউডে শাহ রুখের সঙ্গে সমানে টক্কর চলছে অন্য দুই আমির আর সলমন-এর। শোনা যে যাঁর ক্ষেত্রে সম্রাট। সেটি কেমন! একটি সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, বক্স-অফিস সম্রাট সলমন। ছবির মান কিংবা রেটিংয়ে এগিয়ে আমির। আর শাহ রুখ হলেন বলিউড বাদশা। শোনা যায়, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ নাকি ৬০ কোটি ডলারের ওপর!
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির এক বক্তৃতায় বলেছেন, আমি হেঁটেছি, প্রাণপণে দৌড়েছি আমার স্বপ্নের পথে। যা কিছু পেয়েছি, যা কিছু এসেছে, সবই এসেছে নিজেদের নিয়মে।… আমি শুধু সেটাই করে গেছি, যা আমি জানতাম, আমি সবচেয়ে ভাল পারি।
Check Also
নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই
সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …
শুধুমাত্র শুদ্ধিকরন আর বাংলাদেশ নয়, মমতার যে কথায় কান দিল না মেইনস্ট্রিম মিডিয়া
“ভর্সা যেন না পায় কোনও দাঙ্গামুখো হতচ্ছাড়া, সবাই মিলে বেঁচে থাকার ভর্সা তাদের করুক তাড়া’ …
কোন সাহসে দলের প্রধান স্লোগান কে চ্যালেঞ্জ করলেন শুভেন্দু? কপালে ভাঁজ বিজেপির
দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় উফ্! শুভেন্দুর বক্তৃতা শুনে সেই যে গায়ে কাঁটা দিয়েছে সেই কাঁটা আর যায় …