দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মোলাকাতে সৌজন্যের আধিক্য দেখছেন রাজনীতির কুশীলবদের অনেকেই!
যে কোবিন্দকে মুখ্যমন্ত্রী চিনতেনই না তাঁর প্রতি হঠাৎ এতটা গদগদ ভাব চোখে পড়েছে অনেকেরই। রাজ্যের সিনিয়র রাজনীতিকরা আড়ালে বলছেন, “রাষ্ট্রপতি পদটি আমাদের সকলের কাছেই সম্মানজনক। তাঁকে সম্মান জানানো উচিত এবং প্রত্যাশিত সৌজন্য। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইতিমধ্যেই বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যখন সৌজন্য দেখালেনই তখন আগে দেখালেই ভাল করতেন। ওঁর নাম যখন প্রস্তাব করা হয়েছিল তখন মুখ্য যে ভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন তা নিতান্তই অসৌজন্য।” নেদারল্যান্ডস সফরে যাওয়ার পথে দুবাই বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, কে কোবিন্দ! চিনি না, জানি না… ইত্যাদি। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে রাষ্ট্রপতির অফিসের সঙ্গে একটা কার্যকরী সম্পর্ক যাতে মসৃন থাকে সেই জন্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সৌজন্যের বাড়াবাড়ি।
অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের বক্তব্য, “সৌজন্যেরও তো একটা উদ্দেশ্য থাকে। এক্ষেত্রে সেই উদ্দেশ্য যদি সৎ উদ্দেশ্য হয় তাহলেই মঙ্গল।”
মান্নানের মত অনেকেরই সৌজন্যের উদ্দেশ্য সৎ কি না সেই নিয়ে সংশয় রয়েছে।
রাজনীতির হাঁড়ির খবর যাঁরা রাখেন তাঁরা বলছেন, গুজরাত নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই বিজেপি যেমন রাজ্যে তাদের রাজনৈতিক সক্রিয়তা বাড়াবে, একই ভাবে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিও আবার জোর কদমে মাঠে নামবে। সব মিলিয়ে রাজ্য-রাজনীতি আবার উত্তপ্ত হবে শীতের মরসুমে।
দিল্লির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সম্পর্কও এখন তলানিতে ঠেকেছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনেকের ধারণা। বিশেষ করে বিজেপিতে মোদি, অমিত শাহ এবং বিজয়বর্গীয় — এই ত্রয়ীর যে বলয়, সেই বলয়ে এখনও পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও প্রভাব নেই বলেই বিজেপির শীর্ষ সুত্রের খবর। দিল্লি ও কলকাতার রাজনৈতিক কুশীলবদের অনেকেই মনে করছেন সরকারের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে বা একটি সহজ সম্পর্ক তৈরি করে বিশেষ কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী! মমতাকে যাঁরা জানেন তাঁরা বলে থাকেন, রাজনীতি ছাড়া মমতা এক কদমও হাঁটেন না। তাঁরা আরও বলেন, কোনও মানুষের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক তৈরি করে নেওয়াটাও তাঁর সহজাত।
প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল কংগ্রেস যখন বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত, সে সময় ‘অচেনা’ কোবিন্দকে ধরেই কী হালে পাণি পেতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী!
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এই ঘটনাটিকে নির্ভেজাল সৌজন্য হিসেবেই দেখতে ও দেখাতে চাইছে।
এরই মধ্যে রসিক এক রাজনীতিকের টিপ্পনী, “কে বলল মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি ছাড়া এক কদমও হাঁটেন না! তিনি তো নিয়মিত ট্রেডমিলে হাঁটেন!”
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan